(বাঁ দিকে) অনুব্রত মণ্ডল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
সিউড়িতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা থেকে বাড়ি ফেরার পথে তৃণমূলের এক জেলার নেতা তাঁর এক সতীর্থকে বলছিলেন, ‘‘বীরভূমে আসবেন দিদি। অথচ তাঁর স্নেহের কেষ্টকে মনে করবেন না তিনি, এমনটা হতেই পারে না।’’ ২০২২ সালের ১১ অগস্ট বোলপুরের বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তার পর থেকেই বীরভূম জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল রয়েছেন কারাগারে। বর্তমানে তাঁর ঠিকানা দিল্লির তিহাড় জেল। এত দিন কারাগারে থাকলেও মমতা যে তাঁকে ভোলেননি, তা আবারও জানান দিলেন সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে।
মমতা বলেন, ‘‘বীরভূমে চক্রান্ত চলছে। কেষ্টকে কত দিন ধরে জেলে ভরে রেখেছে। কিন্তু মানুষের মন থেকে ওকে দূর করতে পারেনি। আমি তো আসতে আসতে দেখছিলাম, তরুণ প্রজন্ম ওর কথা বলছে। আমি কাউকে শিখিয়ে দিইনি। আমি মানুষের প্রতিক্রিয়া দেখছিলাম। ও কাজ করেছে, ও কাজ করতে জানে।’’ তিনি বলেন, ‘‘যদি ওর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকে, তা হলে আমি জানতে চাইব, একই অভিযোগ আপনাদের কত জন নেতার বিরুদ্ধে রয়েছে? আজ পর্যন্ত একটা বিষয়েও ব্যবস্থা নিয়েছেন? বিএসএফ-কে লেলিয়ে দিয়েছেন। চোপড়ায় চারটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ক’টা টিম গিয়েছে? বিলকিস, দলিতদের উপর অত্যাচারে ক’টা টিম গিয়েছিল? বাংলায় শুধু জট পাকানোর চেষ্টা করেন আপনারা, আমরা খোলার চেষ্টা করি।’’ ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে অনুব্রত ছাড়াই জয় পেয়েছে তৃণমূল। সম্প্রতি কালীঘাটে বীরভূম জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকেও কেষ্ট অনুগামীদের নিয়ে দলীয় নেতাদের সংগঠন পরিচালনার কথাও বলেছিলেন মমতা। আর আগামী লোকসভা ভোটও যে কেষ্টকে ছাড়াই লড়তে হবে, তা-ও ইতিমধ্যে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে বলেই মনে করছে তৃণমূল নেতৃত্ব। তাই কেষ্টহীন বীরভূমে গিয়ে দলীয় নেতাদের খানিকটা চাঙ্গা করার চেষ্টা করেছেন মমতা। এমনটাই মনে করছে বাংলার রাজনীতির কারবারিদের একাংশ।
অনুব্রত ছাড়া আরও এক তৃণমূল নেতার কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। ভাঙড়ের প্রাক্তন বিধায়ক আরাবুল ইসলামকে সম্প্রতি গ্রেফতার করছে কলকাতা পুলিশ। সেই প্রসঙ্গে টেনে মমতা বলেন, ‘‘আমি কিছু বললে, করে দেখাই। ভাঙড়ে আরাবুলও তো গ্রেফতার হয়েছে। ও তো আমাদের কর্মী! তোমরা কত জনকে গ্রেফতার করেছ।’’