মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রাফিক— সনৎ সিংহ
সম্প্রতি রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় হওয়ার অভিযোগ পাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার সিউড়ির জনসভায় উপস্থিত মুখ্যসচিব বিপি গোপালিককে এই সংক্রান্ত বিষয়ে সাধারণ মানুষের অভিযোগ জানানোর মঞ্চ হিসেবে একটি পোর্টাল তৈরির নির্দেশ দিলেন তিনি। সভা শেষ হওয়ার সময়েই মঞ্চ থেকে মুখ্যসচিবকে দ্রুত আধারের অভিযোগ জানানো সংক্রান্ত পোর্টাল চালু করে তার বিজ্ঞপ্তিও জারি করতে নির্দেশ দিয়েছেন মমতা।
মমতা বলেন, ‘‘আমার কাছে খবর আছে। অনেকের আধার কার্ডের লিঙ্ক কেটে দেওয়া হচ্ছে। জামালপুরে ৫০ জনের আধার লিঙ্ক কেটে দেওয়া হয়েছে। বর্ধমান, বীরভূমে, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তরবঙ্গেও লিঙ্ক কাটা হচ্ছে। প্রথমে বলবে আধার না হলে তুমি চোখে আঁধার দেখবে। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট হবে না, কোনও সুযোগ পাবে না। তুমি কোন অধিকারে আধার লিঙ্ক কেটে নিচ্ছ, লজ্জা করে না!’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ইলেকশনের আগে যাতে কেউ ব্যাঙ্ক লোন না পায়, ব্যাঙ্কের মাধ্যমে টাকা না পায়, ফ্রি রেশন না পায়, লক্ষ্মীর ভান্ডার না পায়, তার জন্য তোমাদের চক্রান্ত। আমি পরিষ্কার করে বলে যাচ্ছি, আমার চিফ সেক্রেটারি-সহ অন্যান্যরা উপস্থিত আছেন। আধার কার্ড না থাকলে আমাদের কোনও স্কিম বন্ধ হবে না। আমরা আমাদের কার্ডের মাধ্যমে আমাদের স্কিম চালিয়ে যাব।’’ এর পরেই রাজ্যের মুখ্যসচিবের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘বাংলার মানুষকে বলব, সাবধান হন, আবার এনআরসি করার চক্রান্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। ‘কা’ ‘কা’ করতে শুরু করেছে আবার। এক মাসের মধ্যেই ভোট ঘোষণা হয়ে যাবে, তার আগেই সব ভোটপত্র কেড়ে নাও। ভোটার লিস্টে ভাল করে নাম তুলবেন। দরকার হলে আমি মুখ্যসচিবকে বলব একটি অনলাইন পোর্টাল চালু করে দিন। যাঁদের যাঁদের আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় করা হচ্ছে, তাঁরা ইমিডিয়েট আমাদের জানাবেন। বিকল্প কী করে দেওয়া যায়, তার পর আমরা দেখব।’’
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি পরিষ্কার বলে যাচ্ছি, আধার না থাকলেও আমাদের কোনও প্রকল্প বন্ধ হবে না। নিজেদের কার্ড দিয়ে চালিয়ে যাব। দিল্লি যা করছে, থোঁতা মুখ ভোঁতা করে দেব। আধার কার্ড, রেশন কার্ড, স্মার্ট কার্ড, কোভিড কার্ড, জন্মের কার্ড, এত কার্ড কি গলায় মালা করে রাখবেন? তার পর আবার কাউকে জিজ্ঞেস না করে বাতিল করে দিচ্ছে। বাংলার মানুষকে বলব, ভয় পাবেন না। আমি আছি। যদি দেখি এর মধ্যে ছলনা আছে, বাংলার একটি প্রকল্পকেও আমি আধার সংযুক্ত হতে দেব না।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘আর ব্যাঙ্ক যদি মনে করে আধার কার্ড না হলে আমি (টাকা) দেব না, তা হলে দরকার হলে আমরা ব্যাঙ্ক ছাড়াই কাজ করব। আমাদেরও তো কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক রয়েছে।’’