ফাইল ছবি
গোয়া যেতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছুটি কাটাতে নয়। মমতার অভিধানে ‘ছুটি’ নেই। মমতা গোয়ায় যেতে পারেন সে রাজ্যের রাজনীতিতে তৃণমূলের জমি শক্তি করতে। আগামী বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে গোয়ায় বিধানসভা নির্বাচন। সেখানেই বিজেপি-র বিপক্ষে শক্তিশালী দল হিসাবে উঠে আসতে চাইছে তৃণমূল। সূত্রের খবর, গোয়ায় ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আই প্যাকের ২০০ জন কর্মী। তাঁরা তৃণমূলের হয়ে কাজ করতেও শুরু করেছেন। শোনা যাচ্ছে, এর পর রাজনৈতিক লড়াইয়ের প্রাথমিক ধাঁচটা বুঝতে গোয়ায় যেতে পারেন স্বয়ং তৃণমূলনেত্রী। প্রসঙ্গত, চলতি সপ্তাহেই নবান্নে মমতা-অভিষেক-প্রশান্ত কিশোর একান্ত এবং দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকে গোয়ার পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা হয়ে থাকতে পারে বলে খবর।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে ইঙ্গিত, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি নাগাদ গোয়ায় নির্বাচন হতে পারে। সেখানে কংগ্রেস, বিজেপি বা আম আদমি পার্টি (আপ)-র পাশাপাশি তৃণমূলও লড়াই করতে চায়। ঠিক যেমন পরিকল্পনা রয়েছে তাদের ত্রিপুরা নিয়ে। ২০২৩-এ নির্বাচন উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে। সেখানে ইতিমধ্যে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিতে শুরু করেছে তৃণমূল। বার বার সেখানে যাচ্ছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। গিয়েছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সূত্রের খবর, পুবের ত্রিপুরার পর এ বার তৃণমূলের ভোটকৌশলের নীল নকশায় পশ্চিমের গোয়ার নামও ঢুকে পড়ল। প্রাথমিক ভাবে গোয়ায় সাংসদদের একটি দল পাঠাতে পারে তৃণমূল। তাঁরা প্রাথমিক একটি রিপোর্ট জমা দেবেন দলের কাছে। এ বিষয়ে গোয়ার বেশ কয়েক জন আঞ্চলিক নেতার সঙ্গে ইতিমধ্যে বৈঠকও হয়েছে। অভিষেকও গোয়া যেতে পারেন বলেও তৃণমূল সূত্রের খবর।
গোয়া বিধানসভায় মোট ৪০টি আসন। ত্রিপুরার ঠিক অর্ধেক। ২০১৭ সালের নির্বাচনে গোয়ায় কংগ্রেস জিতেছিল ১৭টি আসনে। ১৩টিতে বিজেপি। তার পরেও বিজেপি ওই রাজ্যে সরকার গঠন করে। সেই সমীকরণকেই ‘হাতিয়ার’ করতে চলেছে তৃণমূল। গোয়ার বাসিন্দাদের কাছে এই বার্তাই নিয়ে যেতে চায় তৃণমূল যে, বিজেপি-র ‘শক্তিশালী বিরোধী’ একমাত্র ঘাসফুল শিবির। অন্য বিজেপি-বিরোধী দলকে ভোট দিলে সেই দলের বিধায়ক শিবির পাল্টাতে পারেন। কিন্তু তৃণমূলকে ভোট দিলে তা বিজেপি-বিরোধী শিবিরেই থাকবে।
সর্বভারতীয় রাজনীতিতে আরও বেশি করে নিজেদের ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যেই ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিম উপকূলের রাজ্য গোয়াকে ‘পাখির চোখ’ করতে চাইছে তৃণমূল। তবে শুধু ঘাসফুল শিবির নয়, লড়াইয়ে সমান তালে রয়েছে আপ-ও। তারাও চাইছে, জাতীয় রাজনীতিতে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে। গোয়াতেও তারা নিজেদের উপস্থিতি জানান দিতে চায়। পর্তুগিজ ইতিহাসে সমৃদ্ধ গোয়া আর কিছু দিনের মধ্যেই যে ভোটের রণক্ষেত্র হয়ে উঠতে চলেছে, তা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট।