মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বীরসিংহে। নিজস্ব চিত্র
নারীশিক্ষার পথিকৃৎ তিনি। প্রথা আর সংস্কারের জালে আটকে থাকা মেয়েদের স্বাধীনতা আর সম্মানের দিশারীও তিনিই।
সেই ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দু’শো বছরের জন্মদিবস উদ্যাপনের সূচনা ছিল মঙ্গলবার। বীরসিংহের সেই অনুষ্ঠানে রাজ্যের প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী বারবার মনে করালেন, তাঁর সরকার মেয়েদের সার্বিক উন্নয়নে কতটা আন্তরিক। কন্যাশ্রী, রূপশ্রীর মতো নানা প্রকল্প, ছাত্রীর স্কলারশিপ, স্কুল-কলেজে মেয়েদের হস্টেল তৈরির মতো নানা কাজের উল্লেখ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা, “এক সময় এই বাংলার মেয়েরা ভারতবর্ষকে পথ দেখিয়েছে। আগামী দিনেও পথ দেখাবে বাংলার মেয়েরাই।”
নারীশিক্ষার সূচনা থেকে বাল্যবিবাহ রোধ, বিধবা বিবাহ প্রচলনে বিদ্যাসাগরের ভূমিকা এ দিন স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, “তখন দশ-বারো বছরের মেয়েদের সঙ্গে আশি বছরের বয়স্ক লোকের বিয়ে হত। বিয়ের দু’দিন পরই স্বামী মারা যেতেন। অল্প বয়সেই মেয়েরা বিধবা হয়ে যেত। তখন তাদের কথা কেউ ভাবতেন না। মেয়েদের জীবন দুবির্ষহ হয়ে উঠত। এগিয়ে এসেছিলেন বিদ্যাসাগর। তাঁকে অনেক ঝড়ঝাপটা সহ্য করতে হয়েছে। তবে হাল ছাড়েননি। চালু করেছিলেন বিধবা বিবাহ।” বিদ্যাসাগরের সেই আদর্শ রক্ষার বার্তাও দিয়েছেন মমতা। তাঁর কথায়, “নারীর উন্নতি না হলে সমাজ এগোবে না। নারীকে সম্মান করতে হবে।” মুখ্যমন্ত্রীর মুখে এ কথা শুনে তখন দর্শকাসনে মেয়েদের হাততালির ঝড় উঠেছে। এ দিনের মঞ্চে বিয়ে রোখা নাবালিকা, কৃতী ছাত্রীদের সম্মানিতও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বুঝিয়ে দিয়েছেন, নারীশিক্ষার আঁতুড়ঘর এই বীরসিংহের মেয়েদের সার্বিক সামাজিক উন্নয়নে তাঁর সরকার পাশে রয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর বার্তায় খুশি বীরসিংহের ছাত্রীরা। সভায় উপস্থিত বীরসিংহ বিদ্যাসাগর বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা বলছে, “মুখ্যমন্ত্রীর মুখে মেয়েদের গুরুত্বের কথা শুনে ভীষণ ভাল লাগছে। তবে সরকারকে যেমন বিভিন্ন পরিকল্পনা নিতে হবে, তেমনই আমাদেরও এগিয়ে আসতে হবে।”