Mamata Banerjee

Mamata Banerjee: ‘বাম পরাস্ত, এ বার পালা বিজেপির’, মমতার লক্ষ্য কংগ্রেসও

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘‘রাজ্যে দলকে আপনারা মজবুত করে রাখুন। আগলে রাখুন। আমাকে বলুন, দেশ থেকে বিজেপিকে হটাতে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৮:৪৩
Share:

দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে বার্তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছবি: পিটিআই।

বিজেপির বিরুদ্ধে জাতীয় রাজনীতিতে নিজের গুরুত্ব পুরোদস্তুর প্রতিষ্ঠা করতে চান তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি চান, রাজ্যে দলের অন্য নেতা ও কর্মীরা দলকে আরও মজবুত করে তুলুন, যাতে তিনি জাতীয় রাজনীতিতে আরও বেশি সময় দিতে পারেন।

Advertisement

বুধবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘‘রাজ্যে দলকে আপনারা মজবুত করে রাখুন। আগলে রাখুন। আমাকে বলুন, দেশ থেকে বিজেপিকে হটাতে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আজকের প্রজন্ম সিপিএমের অত্যাচার দেখেনি। ত্রিপুরায় এখন যে অত্যাচার হচ্ছে, তার থেকেও তা অনেক বেশি ছিল বামফ্রন্টের আমলে। সিপিএমের মতো শক্তিকে যদি হারাতে পারি, তা হলে বিজেপিকেও পারব।’’ কংগ্রেসের সমালোচনার পাশাপাশি আঞ্চলিক দলগুলিকে নিয়ে বিজেপি-বিরোধী জোট গঠনের কথাও বলেন মমতা। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি দুঃখ পাই, কংগ্রেস মেঘালয় ও চণ্ডীগড়ে বিজেপির হয়ে ভোট করে দিয়েছে। ’’

কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব বেড়েছে কিছু দিন ধরে। আগে তৃণমূলের দিক থেকে উপযুক্ত সাড়া মেলেনি। আবার এখন মমতা চাইলেও, কংগ্রেস নেতৃত্ব একসঙ্গে আসতে আগ্রহী নন। তৃণমূলনেত্রীর মন্তব্য, ‘‘আমরা তো চেয়েছিলাম। কিন্তু কেউ যদি না আসে, নিজের অহংকার নিয়ে বসে থাকে, থাকবে। আমরা রবীন্দ্রনাথের সেই পথ নেব— যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চলো রে।’’ তারপরেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘লড়তে তো হবে।’’

Advertisement

বিজেপিকে নিশানা করে মমতা এ দিন বলেন, ‘‘বিজেপির শুধু কেন্দ্রীয় এজেন্সি আছে। আর টাকা আছে। টাকায় চলছে দলটা।’’ তার পরে কেন্দ্রীয় বাজেট নিয়েও এ দিন বিজেপির কড়া সমালোচনা করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘বাজেটে কিছুই নেই। সব ভোঁ-ভাঁ।’’ মমতার কটাক্ষ, ‘‘বিজেপি শুধু হিরে চায়। আর কিছু চায় না। হিরের চচ্চরি করবে। হিরের ঘণ্ট করে খাবে। আর কেউ প্রতিবাদ করলে, পেগাসাস লাগিয়ে দেবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘অভিষেক ও পিকে-কেও (ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর) পেগাসাসের নজরদারিতে রাখা হয়েছিল। আমরা চাই, এর বিচার হোক।’’

সম্প্রতি ঘোষিত পদ্ম-সম্মান নিয়েও বিজেপি সরকারের সমালোচনা করে মমতা এ দিন বলেন, ‘‘পদ্মভূষণ নিয়ে এখন দূষণের রাজনীতি শুরু হয়েছে।’’ এই প্রসঙ্গে তিনি রাশিদ খান এবং সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের কথা তুলে বিজেপির সমালোচনা করেছেন।

সর্বভারতীয় রাজনীতিতে আগামী পদক্ষেপের আভাস দিয়ে তৃণমূলনেত্রী বলেছেন, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে তাঁরা উত্তরপ্রদেশে লড়তে চান। এখন বিধানসভা ভোটে সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদবের পাশে দাঁড়িয়েছেন মমতা। সোমবার তিনি লখনউ যাবেন। মঙ্গলবার অখিলেশকে পাশে নিয়ে বক্তৃতা করবেন। ভার্চুয়াল ব্যবস্থায় জনসভাও করবেন। পরের ধাপে তাঁর পরিকল্পনা, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্বাচনী কেন্দ্র বারাণসীতে প্রচারে যাওয়া।

সেই সঙ্গেই জাতীয় রাজনীতিতে তৃণমূলের এই সক্রিয়তা ব্যাখ্যা করে মমতা এ দিন বলেন, ‘‘কংগ্রেসও এক সময়ে উত্তরপ্রদেশ থেকে সর্বভারতীয় রাজনীতিতে এসেছে। বিজেপি গুজরাত থেকে এসেছে। বাংলায় কাজ করার পরে আমিই তৃণমূলকে সর্বভারতীয় স্তরে নিয়ে এসেছি। এখন দেশের মানুষ তা চাইছেন।’’

অবশ্য বিরোধী ঐক্য নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। রাজ্য দলের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বিরোধীরা যদি তৃণমূলের নেতৃত্ব মেনে না নেয়, তা হলে বিজেপি কী করতে পারে? সারা দেশে তৃণমূলের গ্রহণযোগ্যতা নেই। তার জন্য তো বিজেপি দায়ী নয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement