সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়।
অভিজিৎ বললেন, ‘‘দেশের অর্থনীতির উন্নতি হলে তার প্রভাব পড়বে বাংলাতেও। আরেকটা তরঙ্গ এলে জিডিপি বা মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন আরও নেমে যেতে পারে। দেশের অর্থনীতির উন্নতি না হলে বাংলার পক্ষে একা কিছু করা সম্ভব হবে না।’’
কেন্দ্রের টিকা বণ্টন নীতি নিয়ে ক্ষোভ জানালেন মমতা। বললেন, ‘‘টিকা না থাকলে একসঙ্গে ১০ হাজার লোক এলে কী ভাবে টিকা দেব? পরপর সবাই পাবে। যে রকম টিকা পাব, তেমন দেব।’’ মমতার অভিযোগ, ‘‘গুজরাতে জনসংখ্যা বাংলার প্রায় অর্ধেক, অথচ ওরা বেশি টিকা পেয়েছে। সব রাজ্য টিকা পাক, কিন্তু যেন কোনও বৈষম্য না হয়। বাংলা সীমান্তবর্তী রাজ্য, তাই গুরুত্ব দেওয়া হোক।’’
প্রশ্ন করা হয়েছিল, পুজোর পর কোন শ্রেণির পঠনপাঠন এক দিন অন্তর শুরু করার কথা ভাবছেন? জবাবে মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, পুজোর ছুটির পর স্কুল খোলার বিষয়টি এখনও ভাবনা চিন্তার স্তরে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘শিশু ভূমিষ্ঠই হল না আপনারা অন্নপ্রাশনের কথা ভাবতে শুরু করেছেন।’’
কী ভাবে রোখা যাবে তৃতীয় তরঙ্গ? অভিজিৎ বলছেন, ‘‘তৃতীয় তরঙ্গ নিয়ে অনেক কাজ হয়েছে। প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাজ্যে পর্যাপ্ত অক্সিজেনও রয়েছে। মানুষকে সচেতন করতে হবে। যাতে শরীর খারাপ হলেই আগে থেকে চিকিৎসা শুরু করেন তাঁরা। পরীক্ষার ব্যবস্থা আছে। গ্রামে গ্রামে আশা কর্মী, চিকিৎসকরা রয়েছেন। সামান্য অসুস্থ বোধ করলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। অসুখ বাড়লে হাসপাতালে গেলে তখন সামলানো সমস্যা হতে পারে।’’
পুজোর পর একদিন অন্তর স্কুল খোলার ভাবনা রয়েছে বলে জানালেন মমতা।
অভিজিৎ বললেন, ‘‘প্রতিশ্রুতিমতো টিকার পরিমাণ জোগাতে পারছে না কেন্দ্র। পর্যাপ্ত টিকা নেই দেশে।’’
অভিজিৎ বললেন, ‘‘উৎসবের মরসুমের জন্য গতবছর বিস্তারিত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। রাজ্য সরকার সেটা ভালভাবে কার্যকরও করেছিল। তেমন নিয়ম এ বারও জারি থাকবে বলে আশা করছি।’’ সঙ্গে জুড়ে দিলেন, ‘‘কোভিড মোকাবিলায় বাংলায় অনেক কাজ হয়েছে।‘’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়।
কোভিডের তৃতীয়তরঙ্গ নিয়ে বৃহস্পতিবার নবান্নে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। কোভিড পরিস্থিতিতে স্কুল-কলেজ খোলা নিয়ে অভিজিৎকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘স্কুল কলেজ খোলা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।’’ এর পর তিনি অনুরোধ করেন মুখ্যমন্ত্রীকে বিষয়টি নিয়ে বলার জন্য। মমতা বলেন, ‘‘পুজোর পরে একদিন অন্তর স্কুল খোলা নিয়ে চিন্তা ভাবনা চলছে। আপনারাও বলেছেন। আমরা ভেবে দেখছি।’’