নেতাদের মমতার নির্দেশ, সকলেই যেন সুকন্যার খেয়াল রাখেন। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
গরু পাচার কাণ্ডে বাবা অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই বাড়িতে ‘একা’ হয়ে গিয়েছেন মাতৃহারা সুকন্যা মণ্ডল। আদালতের নির্দেশে চাকরিও গিয়েছে। দিল্লিতে নিয়ে যাওয়ার পরে বাবার ঠিকানা এখন তিহাড় জেল। বার বার ইডি তলব করছে সুকন্যাকেও। এই পরিস্থিতিতে দলের নেতাদের কী করা উচিত তার পরামর্শ ও নির্দেশ দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার নিজের বাড়িতে বীরভূমের তৃণমূল নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন তিনি। সেখানেই নেতাদের মমতার নির্দেশ, সকলেই যেন সুকন্যার খেয়াল রাখেন। তৃণমূল সূত্রে খবর, এমনটা বলার সময়ে মুখ্যমন্ত্রীর গলায় সত্যিই স্নেহের ছোঁয়া ছিল। বৈঠকে উপস্থিত এক তৃণমূল নেতার কথা অনুযায়ী, মমতা বলেন, ‘‘কেষ্ট এখন জেলে রয়েছে। মেয়েটা একা আছে! তোরা ওর বাড়ির খোঁজ-খবর রাখিস।’’
মমতা তথা তৃণমূল যে অন্য গ্রেফতার হওয়া নেতাদের তুলনায় বেশি করে অনুব্রতের পাশে আছে তা আগেও স্পষ্ট হয়েছে। ‘মন্ত্রী’ পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ একে একে গ্রেফতার হওয়া বাকিদের দল বহিষ্কার করলেও অনুব্রত এবং পলাশিপাড়ার বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি। তবে অনুব্রত আরও এগিয়ে। কারণ, গ্রেফতারের পরে মমতা এমনটাও বলেছিলেন যে, মুক্তি পেলে ‘বীর’-এর সম্মান দেওয়া হবে অনুব্রতকে। কেষ্টর বিষয়ে যে দল নরম তা বুঝিয়ে শুক্রবারের বৈঠকেও বীরভূমে জেলা সভাপতি বদল করা হয়নি। তিহাড়ে বসেও বীরভূম তৃণমূলের জেলা সভাপতি রয়ে গিয়েছেন অনুব্রত।
অন্য দিকে, চাপে রয়েছেন সুকন্যাও। পর পর দু’দিন দিল্লিতে ইডির সদর দফতরে হাজিরা এড়িয়েছেন তিনি। গত বছর অগস্টে অনুব্রত গ্রেফতার হন। এর পরে সুকন্যাকে দিল্লিতে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই। সেই সময় সিবিআই সূত্রে দাবি করা হয়েছিল, সুকন্যার বিপুল সম্পত্তি সম্পর্কে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হলেও তিনি প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, সব প্রশ্নের উত্তর তাঁর বাবা এবং হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারিই (যিনি এখন ইডি হেফাজতে) দিতে পারবেন। ইডি সূত্রে জানা যায়, সেই কারণেই অনুব্রত ও সুকন্যাকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা ভাবা হয়। তদন্তকারীদের একাংশ মনে করছেন, তাতে রহস্যের জট অনেকটাই খুলবে। যদিও সেটা এখনও পর্যন্ত সম্ভব হয়নি। কারণ, শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে সুকন্যা দিল্লি যাননি।