গাছ উপড়ে ইলেকট্রিকের পোল ভেঙে পড়ে বিপর্যস্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকা। —রবিবার নামখানায় তোলা নিজস্ব চিত্র
আয়লার স্মৃতি ফিরিয়ে আনল ঘূর্ণিঝড় বুলবুল। বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পশ্চিম অংশে সৃষ্টি হয়ে এই অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে আসে উত্তর-পূর্ব দিকে। শনিবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ১১টা অবধি ঘণ্টায় ১১০-১২০ কিমি বেগে বুলবুল বয়ে যায় সুন্দরবনের ধানচি জঙ্গল সংলগ্ন অঞ্চল দিয়ে। স্থলভাগে আছড়ে পড়ার আগে কিছুটা শক্তিক্ষয় করলেও এর তাণ্ডবলীলা থেকে রেহাই পেল না রাজ্য। পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ অংশ লন্ডভন্ড হয় বুলবুলের তাণ্ডবে।
আবহবিদদের ধারণা, ক্রমশ শক্তি হারিয়ে বুলবুল দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপর দিয়ে বয়ে গিয়ে বাংলাদেশের খেপুপাড়ায় ঢুকবে। ফলে রবিবারও দুই পরগনা এবং পড়শি বাংলাদেশের উপকূলবর্তী অংশে ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে রবিবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই কলকাতা ও শহরতলির আকাশে সূর্যের দেখা মিলেছে। ধীরে ধীরে পরিষ্কার হয়েছে মেঘলা আকাশ।
তবে শনিবার রাজ্য জুড়ে তাণ্ড চালালেও আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, শক্তি হারাচ্ছে ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় বুলবুল। রবিবার সকাল ৭টার বুলেটিনে মৌসম ভবন জানিয়েছে, শক্তি হারিয়ে বুলবুল কলকাতার থেকে ১২৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে।
লাইভ আপডেট
• বহু চাষের জমিতে জল, নষ্ট ফসল
• ভেঙে পড়েছে প্রচুর কাঁচা বাড়িঘর
• দিঘা-শঙ্করপুরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, উপড়ে গিয়েছে প্রচুর গাছপালা
ধানের খেতে বুলবুলের তাণ্ডব। নিজস্ব চিত্র
• কলকাতা পুলিশের এলাকায় মোট ৩০টি গাছ ভেঙে বা উপড়ে পড়েছে। তার মধ্যে অধিকাংশই সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়েছে। জানাল কলকাতা পুলিশ।
• তপসিয়ায় গাছ উপড়ে তার নীচে চাপা পড়েছিলেন লালবাতি মল্লিক নামে এক মহিলা। তাঁকে উদ্ধার করে এনআরএস হাসপাতালে ভর্তি করেছে পুলিশ।
• দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলি ও মৈপিঠে প্রচুর গাছপালা ভেঙে পড়েছে। মাটির ঘর ভেঙে পড়েছে। সব থেকে বেশি প্রভাব পড়েছে সাগর নামখানা ও মৌসুমী দ্বীপে।
• ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের মোকাবিলায় প্রশাসনের তরফে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
• দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসকের কন্ট্রোল রুম নম্বর: ০৩৩-২৪৭৯-১৪৬৯ / ০৩৩-২৪৫০১৩৫১
• জেলার বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের নম্বর: ০৩৩-২৪৩৯৯২৪৭
• দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানায় ভেঙে পড়ল দু’জেটি।
• কাঁকুড়গাছিতে রাত সাড়ে ৩টে নাগাদ গাছ ভেঙে পড়ে। গাছ পড়ে ফুটপাথের রেলিংও বেঁকে যায়। তবে কলকাতা পুরসভার কর্মীরা রাতের মধ্যে তা কেটে ফেলেন, যাতে রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক থাকে।
• বুলবুলের তাণ্ডবে শনিবার গাছ ভেঙে পড়ল সাদার্ন অ্যাভিনিউতে। গাছ ভেঙেছে আলিপুরেও। গাছ সরিয়ে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টায় তৎপর পুরসভা।
আলিপুরে গাছ ভেঙে পড়ার পর তৎপরতার সঙ্গে সরিয়ে নিচ্ছেন পুরকর্মীরা। —নিজস্ব চিত্র
• সাগরদ্বীপ থেকে এই মুহূর্তে বুলবুল রয়েছে ১৬০ কিলোমিটার দূরে।
• সকাল ৭টা ৪৪ মিনিট: কলকাতার পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব থেকে ১২৫ কিলোমিটার দূরে বুলবুল অবস্থান করছে।
• সকাল ৭টা ৪৩ মিনিট: মৌসম ভবন জানিয়েছে, সুন্দরবনের ৭৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে বুলবুল।
• আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, সকাল ৭টা নাগাদ বুলবুল শক্তি হারিয়ে ভয়ঙ্কর থেকে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে।
• শক্তি হারাচ্ছে ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় বুলবুল।
• আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, রবিবার বুলবুলের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৭০ কিমি। তখন এটি শক্তি হারিয়ে ঘূর্ণিঝড় থেকে পরিণত হবে গভীর নিম্নচাপে। এদিনই আরও দুর্বল হয়ে সেটি পরিণত হবে নিম্নচাপে। তখন ঝোড়ো বাতাসের গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৫০ কিমি।
•রাজ্যের বেশিরভাগ অংশে এ দিন হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা। উপকূলীয় কিছু অংশে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া ও হুগলিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা থাকছে।
• বৃষ্টির পাশাপাশি বয়ে যাবে ঝোড়ো হাওয়া। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কমবে বাতাসের গতিবেগ। ঘণ্টায় ৮০ কিমি বেগে ঝোড়া বাতাস বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
•শনিবারের মতো রবিবারও উত্তাল থাকবে সমুদ্র।
• বুলবুলের তাণ্ডবে দুই পরগনা, দুই মেদিনীপুর ও হাওড়ায় বেশ কিছু কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
•কিছু জায়গায় বিদ্যুত সরবারহ বিঘ্নিত হয়েছে।
• বিভিন্ন জেলার বেশ কিছু অংশে গাছ ভেঙে পড়ে।
• ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কাঁচা ও পাকা, দু’ রকমের রাস্তাই।
•সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপকূলীয় অংশের কৃষিফসল।
• রবিবারও মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
• উপদ্রুত অংশের বাসিন্দাদের বাড়ি থেকে বার হতে নিষেধ করা হয়েছে।
• সমুদ্র সৈকত এবং বন্দর অংশে জারি করা হয়েছে সতর্কতা।
•দিঘা, মন্দারমণি, তালসারি, শঙ্করপুর, বকখালি ও সাগরদ্বীপে পর্যটকদের সমুদ্রে নামা রবিবারও সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
• বুলবুলের মোকাবিলায় শনিবার রাতভর নবান্নে হাজির ছিলেন পুলিশ ও প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তারা। রাতে মুখ্যমন্ত্রী সেখানে সাংবাদিক বৈঠকও করেন।
•মুখ্যমন্ত্রী জানান, এখনও অবধি উপকূলবর্তী এলাকা থেকে ১ লক্ষ ৬৪ হাজার ৩১৫ জনকে সরানো হয়েছে নিরাপদ স্থানে। তাঁদের মধ্যে ১ লক্ষ ১২ হাজার ৩৬৫ জন আশ্রয় নিয়েছেন ত্রাণ শিবিরে। রাজ্য জুড়ে ব্যবস্থা করা হয়েছে ২১৫ টি রান্নাঘরের। ত্রাণ শিবিরে মজুত করা হয়েছে পরিস্রুত পানীয় জলের ২ লক্ষ ৪০ হাজার পাউচ।
• ক্ষয়ক্ষতি কতটা হয়েছে, তা সরেজমিনে পরীক্ষা করা হবে। তার জন্য ব্যবহার করা হবে ড্রোন ‘দুর্দান্ত’-কে।
• আয়লার পরে যে ত্রাণশিবিরগুলি খোলা হয়েছিল, সেগুলি কাজে লাগানো হয়েছে।
• মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, বুলবুলের প্রভাব কেটে যাওয়ার পরেও যাঁরা ফিরে যাওয়ার সমস্যা থাকবে, তাঁরা ত্রাণ শিবিরে থাকতে পারবেন। তার পরে তাঁদের পুনর্বাসন নিয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে সরকার।