প্রতীকী ছবি।
আবগারি শুল্ক বৃদ্ধির জেরে পুজোর পরে দাম বেড়েছে মদের। এই অবস্থায় অরুণাচল প্রদেশ থেকে চোরাপথে মদ ঢুকছে বঙ্গে। এই রাজ্যে এমনিতে যে-হুইস্কির দাম এক হাজার টাকা, সেটাই মাত্র ৩০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। ৬৮০ টাকার রাম মিলছে মাত্র ১৫৫ টাকায়। গুণমান একই। গত চার মাসে উত্তরবঙ্গ থেকে এই ধরনের প্রায় ২০ কোটি টাকার মদ বাজেয়াপ্ত করেছে রাজ্যের আবগারি দফতর।
চোরাপথে আসা মদ নিয়ে মামলায় আবগারি দফতরের অফিসারেরা এখনও পর্যন্ত ২৯ জনকে গ্রেফতার করেছেন। আবগারি দফতর সূত্রের খবর, ধৃতদের জেরা করে মিলেছে বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর তথ্য। ১) চোরাচালানের গোটা ব্যবসা দিল্লি ও উত্তরপ্রদেশে বসে নিয়ন্ত্রণ করছেন দু’জন। তাঁরাই এই ব্যবসায় বিনিয়োগ করছেন। প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেলেও এখনও তাঁদের কাছে পৌঁছনো যায়নি। ২) চোরাচালানের এই ব্যবসায় এতটাই লাভ থাকছে যে, বাজেয়াপ্ত করা লরি ছাড়ানোরও প্রয়োজন মনে করছেন না চোরাকারবারিরা! আবগারি দফতরের অফিসারদের বক্তব্য, লাভ প্রচুর বলেই লরির দাম অনায়াসে বাদ দিতে গায়ে লাগছে না। সন্দেহ করা হচ্ছে, নিয়মিত নজরদারি চালিয়ে গত চার মাসে ২৫টি ক্ষেত্রে চোরাই মদ আটক করা হলেও তার বহু গুণ বেশি মদ ঢুকে গিয়েছে বঙ্গে। তবে অরুণাচলে তৈরি ওই মদ এখনও কলকাতায় পৌঁছতে পারেনি। তবে তা যে আসানসোল পর্যন্ত এসে গিয়েছে, তার প্রমাণ মিলেছে। ওই মদের শিশিতে লেখা ‘ফর সেল ইন এপি ওনলি’। গুণমানের ক্ষেত্রে ইতরবিশেষ নেই। শুধু বাংলায় আবগারি শুল্ক বেশি হওয়ায় ওই মদের চোরাচালান বেড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
আবগারি অফিসারেরা জানাচ্ছেন, সাধারণত অন্য পণ্যের মধ্যে লুকিয়ে এই ধরনের চোরাই মদ পাঠানোই দস্তুর। কিন্তু ইদানীং কার্যত বুক ফুলিয়ে লরিতে পেটির পর পেটি মদ পাঠানো হচ্ছে। রাজ্যের অবগারি দফতরের স্পেশাল কমিশনার (এনফোর্সমেন্ট) সুব্রত বিশ্বাস জানান, অরুণাচলের পাপুমপারে জেলায় আইন মেনেই মদ তৈরি হচ্ছে। তার একাংশ লরিতে চাপিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারে। ‘‘অসমের বঙ্গাইগাঁও, গোসাঁইগাঁও হয়ে ৫৭৫ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে ওই মদ আলিপুরদুয়ার সীমানা দিয়ে আমাদের রাজ্যে ঢুকছিল। বিহারের নির্বাচনের সময়েই এটা শুরু হয়। গত চার মাসে চোরাচালান বেড়েছে। সামনে বঙ্গে নির্বাচন। তাই যথাসম্ভব বেশি নজরদারি চালানো হচ্ছে,’’ বলেন সুব্রতবাবু।