Tejasvi Surya

ভিড় নিয়ে চিঠি রাজ্যের, বিজেপি অনড় অভিযানে

বুধবার বিকেলে অভিযানকারীদের চিঠি হাতে পাওয়ার পরেই পুলিশ ও প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা পরিস্থিতির বিভিন্ন সম্ভাবনা খতিয়ে দেখেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২০ ০৪:৩৫
Share:

কলকাতা বিমানবন্দরে বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি তেজস্বী সূর্য। নিজস্ব চিত্র।

বিজেপির ডাকে আজ, বৃহস্পতিবার নবান্ন অভিযান। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই অন্তত ৫০ হাজার লোক নিয়ে এই অভিযান হবে বলে পুলিশ এবং নবান্নকে জানিয়েছে কর্মসূচির উদ্যোক্তা রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চা। চিঠি পেয়েই অভিযানকারীদের সচেতন করে প্রশাসন পাল্টা জানিয়ে দিয়েছে, রাজ্য শান্তিপূর্ণ এবং গণতান্ত্রিক ভাবে প্রতিবাদ-আন্দোলন সমর্থন করে।

Advertisement

কিন্তু কেন্দ্রের করোনা সুরক্ষাবিধি অনুযায়ী এখন এত লোক নিয়ে সমাবেশ করতে দেওয়া যাবে না। প্রত্যাশিত ভাবেই সরকারের এই পরামর্শ খারিজ করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্যে গণতন্ত্র ফেরানো এবং বেকারদের কর্মসংস্থানের দাবিতে তাঁদের এই কর্মসূচি হবেই।

এমনই এক উত্তপ্ত আবহে আজ নবান্ন অভিযান মোকাবিলায় পুলিশ-প্রশাসন অবশ্য প্রস্তুতিতে খামতি রাখছে না। জীবাণুনাশের কাজ করার জন্য আজ ও কাল, শুক্রবার নবান্ন বন্ধ থাকবে। মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে কোনও পদাধিকারী বা কর্মীর আজ অফিসে থাকার কথা নয়। দিলীপবাবুর কথায় যা ‘পালিয়ে যাওয়া’। তবু ফাঁকা নবান্নকে নিশ্ছিদ্র সুরক্ষাবলয়ে ঘিরে ফেলা হচ্ছে। থাকছে জলকামান-সহ ভিড় হঠানোর বিবিধ ব্যবস্থা।

Advertisement

আরও পড়ুন: লরির চাকায় করোনা!

বিজেপি জানিয়েছে, আজ কলকাতার দিক থেকে দু’টি মিছিলের একটিতে নেতৃত্ব দেবেন দিলীপবাবু এবং অন্যটিতে কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও মুকুল রায়। হাওড়া ময়দান থেকে মিছিল করবেন যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি সৌমিত্র খান এবং সর্বভারতীয় সভাপতি তেজস্বী সূর্য। সাঁতরাগাছি থেকে আর একটি মিছিল আনার কথা রাজ্য দলের সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর।

আরও পড়ুন: দুই থানা অভিযোগ নেয়নি, দাবি শমীকের

রাজ্য প্রশাসনকে বিজেপি যুব মোর্চার যে চিঠি দিয়েছে, তাতে শুধু কলকাতার দু’টি মিছিলের প্রতিটিতে ২৫ হাজার করে লোক থাকবেন বলে দাবি করা হয়েছে। সেই সংখ্যায় আস্থা রাখলে অন্য মিছিলগুলির হিসেব ধরে অভিযানকারীর সংখ্যা ৫০ হাজারের চেয়েও বেশি হওয়ার কথা। নবান্ন প্রশ্ন তুলেছে এই সম্ভাব্য জনসমাগম নিয়ে।

আরও পড়ুন: টিটাগড়ে মণীশ-খুনে শুটারের হদিস নেই এখনও

বুধবার বিকেলে অভিযানকারীদের চিঠি হাতে পাওয়ার পরেই পুলিশ ও প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা পরিস্থিতির বিভিন্ন সম্ভাবনা খতিয়ে দেখেন। তার পরেই রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের বিশেষ সচিব জবাবি চিঠিতে বিজেপির যুব নেতাদের জানান, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা আইনবলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আগেই জানিয়েছে, অতিমারির কারণে ১০০-র বেশি লোক নিয়ে জমায়েত বা মিছিল এখন করা যাবে না। নবান্নের আশপাশে ১৪৪ ধারা থাকে। তাই সেখানে এই ধরনের সমাবেশ আইনবিরুদ্ধ। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট জনগণের ব্যবহারের জায়গা আটকে প্রতিবাদ-আন্দোলন করা নিয়ে এ দিনই নির্দিষ্ট নীতির কথা বলেছে। পুলিশ-প্রশাসন তা মানতে বাধ্য। চিঠিটি এ দিন রাতেই হোয়াট্সঅ্যাপ, ই-মেল এবং ফ্যাক্সের মাধ্যমে অভিযানের উদ্যোক্তাদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

অভিযানের সিদ্ধান্তে অনড় দিলীপবাবু এর পর প্রশ্ন তোলেন, ‘‘কেন্দ্রের আইন কি কেবল বিজেপির জন্য? ভাঙড়ে তৃণমূলও তো করোনার মধ্যে ২০ হাজার লোকের সমাবেশ করেছে।’’ তাঁর ঘোষণা, ‘‘আমরা আমাদের গণতান্ত্রিক প্রতিবাদের অধিকার প্রয়োগ করব।’’ এই অভিযান যে ‘শান্তিপূর্ণ’ না-ও থাকতে পারে, তেমন ইঙ্গিত আগেই বিজেপি নেতারা দিয়েছেন। সায়ন্তন মঙ্গলবার হুমকি দিয়েছিলেন, ‘‘পুলিশের আচরণের উপর আমাদের আচরণ নির্ভর করবে। পুলিশ গুলি করলে আমরা তো মিষ্টি খাওয়াব না।’’ বুধবার দিলীপবাবুর মন্তব্য, ‘‘এর আগেও আমাদের অভিযানে পুলিশ জলকামান, কাঁদানে গ্যাস, লাঠি সবই প্রয়োগ করেছে। আমাদের কর্মসূচি হলে পুলিশই হিংসাত্মক হয়ে ওঠে। আমরা হই না।’’তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার পাল্টা বক্তব্য, ‘‘ভোটের আগে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে খেলতে চাইছেন ওঁরা। তবে আগুন নিয়ে খেলার আগে পরিণাম ভেবে রাখা উচিত।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement