প্রতীকী ছবি।
গত বারের জেতা আসনের ভাগ হয়ে গিয়েছে। এ বার বাকি বিধানসভা আসনগুলির জন্য রফা-সূত্র বার করতে কংগ্রেসের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন বামফ্রন্টের নেতারা। সুবিধাজনক রফার লক্ষ্যে এ বার বামেদের সূত্র, গত ২০১৬ সালের বিধানসভা ও ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের ফলের নিরিখে আসনের অনুপাত। এই সূত্র হাতে নিয়েই আজ, বৃহস্পতিবার প্রদেশ কংগ্রেস দফতর বিধান ভবনে যাচ্ছেন বিমান বসুরা।
এই পর্বে প্রথমে দু’পক্ষের বোঝাপড়া সংক্রান্ত এবং তার পরে আসন-রফার দুই রাউন্ড বৈঠক হয়েছিল আরএসপি-র মুখপত্রের দফতর ক্রান্তি প্রেসে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর আমন্ত্রণে তৃতীয় দফার বৈঠকের জন্য বিধান ভবনে যাচ্ছেন বাম নেতারা। ওই বৈঠকের আগে আজ অধীরবাবু প্রদেশ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের আলোচনায় ডেকেছেন। বামেদের সঙ্গে বৈঠকে অধীরবাবু নিজেও থাকবেন।
আগের বারের জেতা আসনের নিরিখে কংগ্রেসের জন্য ৪৪ এবং বামেদের ৩৩টি আসন ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে ঐকমত্য হয়েছে জোট-শিবিরে। বাকি ২১৭টি আসন নিয়ে এ বার আলোচনা শুরু হচ্ছে। কংগ্রেস যে প্রাথমিক আসনের তালিকা আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে পাঠিয়েছিল, তার সবটাই বামেরা মেনে নিলে সব শরিকের ভাগেই বেশ কিছু কেন্দ্র কাটা পড়বে। যেমন, ফরওয়ার্ড ব্লক যেখানে ২০১১ সাল পর্যন্ত ৩৪ এবং ২০১৬-য় ২৫টি আসনে লড়েছিল, এ বার তাদের ভাগে কমে গিয়ে হবে ১৫টি। আরএসপি এবং সিপিআই গত বারের যথাক্রমে ১৯ ও ১১ থেকে নেমে আসবে ১১ এবং ৬টি আসনে! সংখ্যার নিরিখে আসন ছেড়ে দিতে বাম শরিকেরা রাজি থাকলেও তাদের প্রশ্ন, মুর্শিদাবাদ, পুরুলিয়া, আলিপুরদুয়ারের মতো জেলায় নিজেদের প্রতীকে প্রার্থী দিতে না পারলে দল ধরে রাখা যাবে কী ভাবে? জোটের মধ্যে আসন বণ্টন যাতে যথাসম্ভব গ্রহণযোগ্য হয়, সেই লক্ষ্যেই গত দু’দিনে আলোচনা হয়েছে বামফ্রন্টের অন্দরে।
বাম সূত্রের খবর, আসন ভাগ নিয়ে টানাপড়েন কমানোর জন্যই গত দু’টি নির্বাচনের তথ্য হাতে নিয়ে বসতে চাইছেন বাম নেতারা। দু’পক্ষের জেতা ৭৭টি আসন বাদ দিয়ে বাকি ২১৭টিতে ২০১৬-র বিধানসভা ও ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে কে কেমন ভোট পেয়েছে, মূলত তার ভিত্তিতে বণ্টন-সূত্র ঠিক হোক, এমনই ভাবনা উঠে এসেছে বাম শিবিরে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘সব দলকেই আসন ছাড়তে তৈরি থাকতে হবে। আমাদের সকলেরই লক্ষ্য, বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে সব ধরনের শক্তিকে জায়গা দেওয়া।’’ প্রদেশ কংগ্রেসের এক বর্ষীয়ান নেতারও বক্তব্য, ‘‘জোট ছাড়া কারও সামনেই অন্য বিকল্প নেই। আলোচনায় সব জটই কেটে যাবে।’’
জোটের আলোচনা চলাকালীনই আসন্ন বিধানসভা ভোটে রাজ্যে তাদের অবস্থান আজ ঘোষণা করে দিতে পারে সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন। বাম ও সহযোগী মিলে ১৬ দলের কর্মসূচিতে তারাও শরিক। বিহারে কংগ্রেসের সঙ্গেই মহাজোটে তারা ছিল। কিন্তু বাংলায় সিপিএম ও কংগ্রেসের সঙ্গে তাদের অবস্থানের ফারাক এখনও মেটেনি।