সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
ধর্মের নামে গোঁড়ামি এবং বিভাজনের রাজনীতির খেলায় তিনি ব্যথিত। কিন্তু এখনও বিশ্বাস করেন, এই অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব। তাঁর বিশ্বাস এখনও বামপন্থায়। তবে বামপন্থীদের নিয়ে সংশয়ও আছে। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নিজের সংশয় এবং প্রত্যয় একই সঙ্গে মেলে ধরলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।
আপাতত প্রবীণ অভিনেতার লড়াই চলছে নার্সিং হোমে। অসুস্থতার আগে সিপিএমের প্রধান বাংলা মুখপত্রের শারদ-সংখ্যায় স্পষ্ট ভাবে সৌমিত্রবাবু এ বার লিখেছেন, ‘এখনও বিশ্বাস করি, বামপন্থাই বিকল্প’। লকডাউনের মধ্যে সিপিএমের চালু করা শ্রমজীবী ক্যান্টিনেও ঘুরে গিয়েছেন সৌমিত্রবাবু। নিজের রাজনৈতিক দর্শনে অটল থেকেই এ বার পুজোর লেখায় তিনি সরব হয়েছেন ধর্মীয় উন্মাদনা ও ভণ্ডামির বিরুদ্ধে।
কৃষ্ণনগরে কাটানো ছোটবেলার স্মৃতি থেকে সৌমিত্রবাবু তুলে এনেছেন একে অপরের ধর্মীয় ও সামাজিক আচারের প্রতি ভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের শ্রদ্ধা ও সহিষ্ণুতার ছবি। অতিমারিতে এত মানুষের মৃত্যু ও আক্রান্ত হওয়ার দুঃসহ পরিস্থিতির মধ্যেও রামমন্দিরের শিলান্যাস এবং তাকে ঘিরে উন্মাদনায় তিনি স্তম্ভিত। এই বিস্ময়ের সূত্রেই তাঁর মন্তব্য, ‘ভাবলে অবাক লাগে, যাঁর আমলে ২০০২ সালে গুজরাতে ভয়ঙ্কর দাঙ্গা হল, সেই তিনিই আজ ভারতবর্ষের মসনদে! ভারতবর্ষের মানুষ এঁদের সহ্য করছেন, তাঁদেরই ভোট দিয়ে আবার জেতাচ্ছেন। তার একটা বড় কারণ আমার মনে হয়, মানুষ শক্তিশালী কোনও বিকল্প পাচ্ছেন না বা বুঝে উঠতেই পারছেন না’। সৌমিত্রবাবুর মতে, ‘আমার বিশ্বাস, বিকল্প কেউ হতে পারলে বামপন্থীরাই হতে পারেন’। নিজেই আবার সংশয়ের সুরে বলেছেন, ‘কিন্তু সেই দৃঢ়তা কোথায়? মানুষের মনে ভরসা তৈরি করতে পারছেন কোথায়’? তবে অর্থনীতি থেকে রাজনীতি, সবেতেই চলতে থাকা ‘চালাকি’র বাইরে বামপন্থাই যে বিকল্প হতে পারে, সে কথা ফের নিঃসংশয়ে বলেছেন।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ইদানীং আর শারদ সংখ্যায় কলম ধরতে পারেন না। এ বার সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেছেন ‘মোদীদের লক্ষ্য, আমাদের লড়াই’ শিরোনামে। রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন বাংলায় তাঁদের বিকল্প কর্মসূচির কথা। বর্ষীয়ান নেতা বিমান বসুর কলমে ফিরে দেখা হয়েছে ১৯৫৯ সালের খাদ্য আন্দোলনকে।