—ফাইল চিত্র।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে জলঙ্গিতে নিহত দু’জনের নাম কেন শোকপ্রস্তাবে নেই, সেই প্রশ্নে উত্তাল হল বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিনই। প্রতিবাদ জানিয়ে ওই দু’জনের জন্য পৃথক ভাবে শোক পালন করলেন কংগ্রেস ও বাম বিধায়কেরা। শুধু নিহত দুই সাধারণ নাগরিকই নন, ফালাকাটার প্রয়াত তৃণমূল বিধায়ক অনিল অধিকারীর নাম কেন শোকপ্রস্তাবে ঠাঁই পেল না, সেই প্রশ্নও তুলেছে বিরোধীরা।
রাজ্যপালের ভাষণ দিয়ে শুক্রবার শুরু হয়েছে বিধানসভার বাজেট অধিবেশন। ভাষণের পরে পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রথামাফিক রাজ্যপালের প্রতি ধন্যবাদজ্ঞাপন প্রস্তাব পাঠ করেন। তার পরেই স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় শোকপ্রস্তাব পাঠ করেন। সেখানে ইন্দ্রজিৎ টাঙ্গি, রাজেশ খৈতান-সহ একাধিক প্রাক্তন বিধায়কের নাম থাকলেও জলঙ্গিতে নিহত দু’জনের কথা ছিল না। স্পিকারের শোকপ্রস্তাব শেষ হওয়ার পরে নীরবতা পালনের সময়েই পয়েন্ট অফ অর্ডার তুলে জলঙ্গির প্রসঙ্গ আনেন কংগ্রেসের সচেতক মনোজ চক্রবর্তী। তিনি প্রশ্ন তোলেন, রাজ্যপালের ভাষণে সিএএ এবং এনআরসি-বিরোধী আন্দোলনে মৃতদের প্রসঙ্গ ছিল। তা হলে জলঙ্গিতে সিএএ-বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে শাসক দলের গুলিতে নিহতদের নাম কেন শোকপ্রস্তাবে থাকবে না? ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার নামও করেন মনোজবাবু। তাঁকে সমর্থন করেন কংগ্রেস ও বাম বিধায়কেরা। মনোজবাবু চ্যালেঞ্জ ছোড়েন, এর জন্য তাঁর বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের প্রস্তাব আনলেও তিনি পিছু হঠবেন না!
আনুষ্ঠানিক ভাবে শোকপ্রস্তাব হয়ে যাওয়ার পরে অধিবেশন দিনের মতো মুলতুবি ঘোষণা হয়ে যায়। তখনই কংগ্রেস ও বাম বিধায়কেরা পৃথক ভাবে শোক পালন করেন। পরে বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘জলঙ্গিতে প্রতিবাদ করতে গিয়ে নিহত আনারুল বিশ্বাস ও বাচ্চা ছেলে সালাউদ্দিনের নাম কেন শোকপ্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত হল না? প্রথার বাইরে গিয়েই প্রতিবাদ এবং আলাদা শোক পালন ছাড়া উপায় ছিল না!’’ মনোজবাবুরও বক্তব্য, ‘‘শাসক দল এক দিকে সিএএ-এনআরসি’র বিরুদ্ধে মুখে প্রতিবাদ করছে আবার তাদের গুলিতে নিহতদের কথা নথিতে রাখতে চাইছে না! আমরা ওই শোকপ্রস্তাব টেবিলে পেশ করে দিয়েছি।’’
আরও পড়ুন: দরিদ্র মেয়েদের স্বাস্থ্যরক্ষা ও পড়াশোনার পথে সাহায্যের হাত টিসিএফ-এর
অধিবেশন শুরুর আগে এ দিন সর্বদল ও কার্য উপদেষ্টা কমিটির (বি এ) বৈঠকে ঠিক হয়েছে, রাজ্য বাজেট পেশ হবে আগামী সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি। রাজ্যপালের ভাষণের উপরে বিতর্ক চলবে মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার। সেই বিতর্কের শেষে জবাবি ভাষণ আগামী শুক্রবার, সে দিনই শুরু বাজেট বিতর্ক। অধিবেশন চালু থাকবে শনিবারও (১৫ই), সে দিন দফাওয়াড়ি ব্যয়বরাদ্দের প্রস্তাবও পেশ হবে। আপাতত আগামী সোমবার পর্যন্ত অধিবেশনের কার্যসূচি ঠিক হয়েছে।