(বাঁ দিকে) কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। প্রধানমন্ত্রী পদের দৌড়ে রয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত অনিতা আনন্দ (ডান দিকে)। —ফাইল ছবি।
ঘরে-বাইরে চাপ। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ইস্তফা দিয়েছেন। এ দিকে, ভাবী আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডাকে তাঁর দেশের সঙ্গে জুড়ে নিয়ে একটি বিতর্কিত মানচিত্র প্রকাশ করেছেন নিজস্ব সমাজমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ। এই পরিস্থিতিতে আগামী মার্চে ট্রুডোর উত্তরসূরি হিসেবে কে কানাডার হাল ধরবেন, তা নিয়ে হাজার চর্চার মধ্যে উঠে আসছে ৫৭ বছরের এক ভারতীয় বংশোদ্ভূতের নামও। তিনি কানাডার পরিবহণ ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী অনিতা আনন্দ।
ষাটের দশকের গোড়ায় ভারত থেকে কানাডা চলে আসেন চিকিৎসক দম্পতি সরোজ ডি রাম এবং এস ভি আনন্দ। তাঁদের কন্যা অনিতার জন্ম নোভা স্কোশিয়ার কেন্টভিলে, ১৯৬৭ সালের ২০ মে। ২০১৯ সালে প্রথম বার হাউস অব কমন্সের ভোটে দাঁড়িয়ে অনিতা নির্বাচিত হন ওকভিল থেকে। দায়িত্ব পান ক্রয় ও জনকল্যাণ দফতরের। অতিমারির সময়ে টিকা ও সুরক্ষা সরঞ্জাম আমদানির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তাঁর। মাঝখানে কানাডার ট্রেজ়ারি বোর্ডের প্রেসিডেন্ট করা হয়েছিল অনিতাকে। অনেকে ভেবেছিলেন, শীর্ষ পদের দৌড় থেকে হয়তো ছিটকে গেলেন তিনি, কারণ কানাডার পার্লামেন্টে বৃহত্তম দলের নেতাই সচরাচর প্রধানমন্ত্রী হন। কিন্তু ট্রুডোর ইস্তফার পরে চমকপ্রদ ভাবেই সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ব্যাঙ্ক অব কানাডা ও ব্যাঙ্ক অব ইংল্যান্ডের প্রাক্তন গভর্নর মার্ক কার্নিস, বর্তমান বিদেশমন্ত্রী মেলানি জোলি-দের পাশাপাশি চর্চায় উঠে এসেছেন কানাডার বহুজাতিক রাজনৈতিক ঐতিহ্যের অন্যতম মুখ অনিতার নাম। সেই সূত্রে আলোচনায় এসেছে খলিস্তানি সমস্যা নিয়ে ভারত ও কানাডার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বর্তমান টানাপড়েনের প্রসঙ্গও।
কানাডার নয়া প্রধানমন্ত্রীর বাড়তি চ্যালেঞ্জ হবে ট্রাম্পের আগ্রাসন সামলানো, যিনি বলেই বসে আছেন যে, ‘‘কানাডার বহু মানুষ আমাদের ৫১তম প্রদেশের বাসিন্দা হতে ইচ্ছুক। কানাডাকে বাঁচাতে বিপুল বাণিজ্য ঘাটতি সহ্য করা আর আমেরিকার পক্ষে সম্ভব নয়। ট্রুডো এটা বুঝেই ইস্তফা দিয়েছেন।’’ ট্রাম্পের এই ‘বাসনার’ প্রতিবাদ করে ট্রুডো এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘কানাডা আমেরিকার অংশ হয়ে যাবে, এমন সম্ভাবনা কণামাত্রও নেই।’