আব্দুল মান্নান ও সুজন চক্রবর্তী। —ফাইল চিত্র।
করোনা পরিস্থিতিতে হাসপাতালে চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুর অভিযোগ সামনে আসছে একের পর এক। সাধারণ মানুষের হয়রানির অভিযোগ সামনে রেখেই এ বার বিরোধী বাম ও কংগ্রেস পরিষদীয় দল হুঁশিয়ারি দিল, পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্য সরকার সক্রিয় না হলে তাদের বিধায়কেরা পালা করে ধর্না-অবস্থানে বসবেন। মানুষের ভোগান্তি কমাতে সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ দাবি করে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী। তাঁদের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর হাতে থাকা স্বাস্থ্য দফতর পরিস্থিতি মোকাবিলায় ‘ব্যর্থ’।
তৃণমূলের তরফে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘কোথাও কোনও অব্যবস্থা নেই। বিনা চিকিৎসায় কারও মৃত্যু হয়নি। পরিস্থিতি সামলানোর ক্ষেত্রে রোগীদের দিক থেকে কিছু গোলমাল হয়ে থাকতে পারে। বামেদের তো ৭০টা হাসপাতাল করার হিম্মত হয়নি! অসুখ এবং মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়।’’
রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক’ জায়গায় পৌঁছতে চলেছে বলে অভিযোগ করে মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে দুই বিরোধী নেতা লিখেছেন, ‘মানুষ কী করবেন, কোথায় যাবেন, কী ভাবে পরিষেবা পাবেন, তা দ্রুত স্পষ্ট করা জরুরি। কার কী দায়িত্ব, তা নির্দিষ্ট করা এবং সেই সংক্রান্ত গাইডলাইন দ্রুত জনস্বার্থে প্রকাশ করা জরুরি’। তার পাশাপাশি সুজনবাবু এ দিন বলেছেন, ‘‘হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরে মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে কিন্তু সরকারের কোনও হেলদোল নেই। এর পরে আমরা বাধ্য হব আন্দোলনের পথে যেতে।’’
বিরোধী দলনেতা মান্নানের বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলুন, দায়িত্ব ভাগ করে দিন। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে পরিস্থিতির উন্নতি এবং আমপান-এ দুর্নীতির ঘটনায় এফআইআর করা শুরু না হলে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের কর্মসূচি জানিয়ে দেব। দরকার পড়লে আমি, সুজনবাবু এবং বিধায়কেরা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই অবস্থানে বসব বিধানসভার ফটকের বাইরে। প্রয়োজনে বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথ ধরে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের সামনেও ধর্না দিতে যেতে পারি। কত পুলিশ বাহিনী আছে, তখন আটকাবেন!’’ সরকারি ওয়েবসাইটে দেওয়া শয্যা সংক্রান্ত তথ্য এবং হাসপাতালের প্রকৃত পরিস্থিতির মধ্যে ফারাক-সহ ভোগান্তির নানা অভিযোগ জানিয়ে এবং দ্রুত ব্যবস্থার দাবিতে এ দিন মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই-ও।