প্রতীকী ছবি।
রাজ্যে বামেদের সঙ্গে জোটে কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের আনুষ্ঠানিক সম্মতির পরে দু’পক্ষের প্রথম বৈঠক হতে চলেছে আজ, বৃহস্পতিবার। কলকাতায় সেই বৈঠকে অবশ্য প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী থাকছেন না। তার আগে বাংলায় নির্বাচনী প্রচার পরিচালনা ও সমন্বয়ের জন্য আরও তিন জন সিনিয়র পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে এআইসিসি-র তরফে।
বিধানসভা ভোট আসন্ন, এমন চারটি রাজ্যেই সিনিয়র পর্যবেক্ষকদের দায়িত্ব দিয়েছে এআইসিসি। বাংলায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কর্নাটকের বি কে হরিপ্রসাদ, ঝাড়খণ্ডের আলমগির আলম এবং পঞ্জাবের মন্ত্রী বিজয় ইন্দ্র সিংলাকে। এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কে সি বেণুগোপাল বুধবার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছেন, ওই নেতারা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক এবং সংশ্লিষ্ট রাজ্যের পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করবেন। নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত তিন জনের মধ্যে হরিপ্রসাদ আগে বাংলার নির্বাচনের স্ক্রিনিং কমিটিতে ছিলেন। ফলে, এ রাজ্য সম্পর্কে তাঁর কিছু অভিজ্ঞতা আছে। সূত্রের খবর, হরিপ্রসাদ ১৫ জানুয়ারির পরে দিল্লি গিয়ে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে দেখা করে বুঝতে চাইবেন, তাঁকে কী ভূমিকা পালন করতে হবে। তার পরে তাঁর কলকাতায় আসার কথা। তবে দলের একটি সূত্রের বক্তব্য, বাংলার পর্যবেক্ষক জিতিন প্রসাদকে ঘিরে এআইসিসি-তে এখনও কিছু জটিলতা আছে বলে হরিপ্রসাদদের বাড়তি দায়িত্ব পালন করতে হতে পারে। রাজ্যে নির্বাচনের তহবিল গড়ার পিছনেও হরিপ্রসাদ, সিংলাদের ভূমিকা পালন করতে হবে।
এআইসিসি-র গড়ে দেওয়া অন্য একটি কমিটির সদস্যেরাই আজ বাম নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চলেছেন। প্রদেশ সভাপতি অধীরবাবু দলীয় কর্মসূচিতে মুর্শিদাবাদে থাকবেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলে মতামত নিয়েই ওই কমিটির দুই সদস্য, বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও প্রদীপ ভট্টাচার্য বৈঠকে যাবেন বলে ঠিক হয়েছে। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর সঙ্গে প্রদীপবাবুর কথার প্রেক্ষিতেই বৈঠকের দিনক্ষণ ঠিক হয়েছে। বামেদের তরফে আজ বৈঠকে থাকার কথা বিমানবাবু, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র এবং তিন বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক, আরএসপি ও সিপিআইয়ের এক জন করে নেতার। যৌথ আন্দোলন, আসন্ন ব্রিগেড সমাবেশ এবং আসন-রফার প্রাথমিক রূপরেখা নিয়েও বৈঠকে কথা হতে পারে বলে জোট শিবির সূত্রের খবর। তৃণমূল ও বিজেপির দড়ি টানাটানির মধ্যেও পুরুলিয়ায় অধীরবাবুর সভায় বা বুধবারই পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে বাম-কংগ্রেসের মিছিল ও সমাবেশে যা ভিড় হয়েছে, তাকে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন জোট নেতৃত্ব।
বিধানসভায় কোন পক্ষ কত আসন দাবি করবে, তার কোনও নির্দিষ্ট সংখ্যা অবশ্য বাম বা কংগ্রেস, কেউই ঠিক করেনি। দু’পক্ষই একে অপরের মনোভাব বুঝতে চায়। পাঁচ বছর আগে বিধাসভায় কংগ্রেস ৪৪ এবং বামেরা ৩৩টি আসনে জিতেছিল। আবার ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে যে সব আসনে দু’পক্ষের প্রার্থী ছিল, সেখানে ১৮৩টি বিধানসভা এলাকায় বামেরা কংগ্রেসের তুলনায় এগিয়ে। কংগ্রেস বামেদের চেয়ে এগিয়ে আছে ২৯টি আসনে। প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘আগের দুই নির্বাচনের তথ্য সামনে রেখে আসন-ভাগের রূপরেখা ঠিক করা উচিত। কোনও পক্ষেরই একতরফা দাবি করে যাওয়া উচিত নয়।’’