আরজি করের ঘটনায় ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারকেই একমাত্র অভিযুক্ত হিসাবে চার্জশিটে উল্লেখ করেছে সিবিআই। —ফাইল চিত্র।
আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারের বেকসুর খালাস চাইলেন তাঁর আইনজীবীরা। শিয়ালদহ আদালতে এই মামলার বিচারপ্রক্রিয়া চলছে। বুধবার সেখানেই নিজেদের বক্তব্য জানান অভিযুক্তের আইনজীবীরা। আদালতে রুদ্ধদ্বার কক্ষে সেই বিচারপ্রক্রিয়া চলছে। পরে ধৃতের আইনজীবী সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তাঁরা অভিযুক্তের মুক্তি চেয়েছেন।
আরজি কর-কাণ্ডে ধৃত সিভিককেই একমাত্র অভিযুক্ত হিসাবে চার্জশিটে উল্লেখ করেছে তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। ধৃতের আইনজীবীদের বক্তব্য, এই যুক্তির পক্ষে সিবিআই যে প্রমাণ দিচ্ছে, তা পর্যাপ্ত নয়। বরং অভিযুক্ত আদৌ এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নন। নির্যাতিতার শরীরে ধস্তাধস্তির কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেছেন অভিযুক্তের আইনজীবীরা। তাঁদের মতে, গোটা ঘটনাটি সাজানো হতে পারে। ধৃতকে ফাঁসানো হয়েছে বলেই মত তাঁদের।
অভিযুক্ত সিভিকের আইনজীবী সৌরভ বলেন, ‘‘এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং সাজানো ঘটনা। আদালতে আমরা সেটাই বলেছি। অভিযুক্ত কিছুই করেননি। ওঁকে ফাঁসানো হয়েছে। আমরা ওঁর বেকসুর খালাসের দাবি জানিয়েছি।’’ কেন মনে হচ্ছে অভিযুক্ত নির্দোষ? আইনজীবী বলেন, ‘‘নির্যাতিতার শরীরে ধস্তাধস্তির কোনও চিহ্ন নেই। সিবিআই তো বলছে, ঘটনার সময়ে অভিযুক্ত নির্যাতিতার উপরে ছিলেন। তা হলে তো তাঁর শরীরে ধস্তাধস্তির চিহ্ন থাকা উচিত। জামা ছিঁড়ে যাওয়া উচিত। তেমন কিছু তো হয়নি। অভিযুক্তের আঙুলের ছাপও মেলেনি। হতে পারে পুরোটাই পরে সাজানো হয়েছে।’’
আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে আদালতে এর আগে সিবিআই নিজেদের বক্তব্য জানিয়েছে। ধৃতের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সিবিআইয়ের আইনজীবীরা। অভিযুক্তের আইনজীবীদের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার আবার বলবেন তাঁরা।
গত ৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চার তলার সেমিনার হল থেকে মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁকে ধর্ষণ এবং খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনার পরের দিনই কলকাতা পুলিশ অভিযুক্ত সিভিককে গ্রেফতার করেছিল। হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে তাঁকে দেখা গিয়েছে। তাঁর হেডফোন পাওয়া গিয়েছে ঘটনাস্থল থেকেও। পরে এই ঘটনার তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। কেন্দ্রীয় সংস্থা চার্জশিটে জানিয়েছে, ধৃত সিভিকই একমাত্র অভিযুক্ত। তবে নির্যাতিতার বাবা-মা আদালতে জানান, এই ঘটনা এক জনের পক্ষে সম্ভব বলে তাঁদের মনে হয় না। আরও বিশদ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।