নাগপুরে ২৬তম বিবাহবার্ষিকীর দিন একসঙ্গে আত্মঘাতী হয়েছেন দম্পতি। ছবি: সংগৃহীত।
২৬তম বিবাহবার্ষিকী উপলক্ষে বাড়িতে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন দম্পতি। গভীর রাত পর্যন্ত অতিথিরা বাড়িতেই ছিলেন। চলেছে দেদার পার্টি। অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফাঁকা হওয়ার পরেই একসঙ্গে গলায় দড়ি দিলেন দম্পতি। একসঙ্গে লিখে গেলেন সুইসাইড নোটও। তাঁদের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা এলাকায়।
নাগপুরের মার্টিননগর কলোনিতে থাকতেন ৫৭ বছরের জেরিল ড্যামসন অস্কার মনক্রিফ এবং তাঁর স্ত্রী ৪৬ বছরের অ্যান। মঙ্গলবার সকালে নিজেদের ফ্ল্যাট থেকেই তাঁদের নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবারই ছিল তাঁদের ২৬তম বিবাহবার্ষিকী। সেই উপলক্ষে আগের দিন রাতে বাড়িতে আত্মীয়স্বজন এবং প্রতিবেশীদের নিমন্ত্রণ করেছিলেন দম্পতি। রাত ১২টায় বিবাহবার্ষিকীর কেকও কাটেন। কেন তাঁরা সেই রাতেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিলেন, তা স্পষ্ট নয়। সুইসাইড নোটে এই সিদ্ধান্তের কারণ সম্পর্কে কোনও তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জেরিল পেশায় রন্ধনশিল্পী। একাধিক নামী হোটেলে রান্নার কাজও করেছেন। লকডাউনের পর থেকে এই কাজ বন্ধ করে দেন তিনি। তার পর পরিচিতের সুদে টাকা ধার দিতেন। অ্যান বাড়িতেই থাকতেন। পার্টি শেষ হলে ভোররাতে সমাজমাধ্যমে দু’জন পৃথক সুইসাইড নোট পোস্ট করেন। দম্পতি নিঃসন্তান ছিলেন। তাঁদের সম্পত্তি পরিচিতদের মধ্যে সমান ভাগে যাতে ভাগ করে দেওয়া হয়, সেই অনুরোধও করেছেন পরিবারের কাছে। তাঁদের পোস্ট দেখে পরিচিতেরা ফ্ল্যাটে যান এবং দু’জনের দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশকেও।
ফ্ল্যাটের রান্নাঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল জেরিলের দেহ। তাঁর স্ত্রীর দেহ ছিল সোফার উপর শোয়ানো। ফুল দিয়ে সাজিয়েও দেওয়া হয়েছিল দেহটি। পুলিশের অনুমান, প্রথমে গলায় দড়ি দেন মহিলাই। মৃত্যুর পর তাঁর দেহ নামিয়ে সোফার উপর রাখেন প্রৌঢ়। ফুল দিয়ে সাজান। তার পর নিজে একই জায়গায় একই ভাবে আত্মঘাতী হন। ২৬ বছর আগে যে পোশাক পরে তাঁরা বিয়ে করেছিলেন, মৃত্যুর আগেও সেই পোশাকেই সেজেছিলেন দম্পতি। তাঁদের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী, দু’জনের দেহ একই কফিনে শুইয়ে কবর দেওয়া হয়েছে।
কেন একসঙ্গে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিলেন দম্পতি, পুলিশের কাছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তারা অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে অনুসন্ধান শুরু করেছে। দু’জনের দেহই পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। তাঁদের মোবাইল ফোনগুলিও ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।