নেশার ঘোরে নিয়মিত চলা অশান্তি রুখতে বাবার গায়ে আগুন দিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল ছেলের বিরুদ্ধে। ছেলেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রতীকী ছবি।
নিত্যদিনের অশান্তিতে ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গিয়ে পূর্ব যাদবপুর থানা এলাকার অহল্যানগরে বাবাকে খুন করেছিল ছেলে। নেশার ঘোরে নিয়মিত চলা অশান্তি রুখতে এ বার বাবার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল আর এক ছেলের বিরুদ্ধে। গুরুতর অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি সেই বাবা। অভিযুক্ত ছেলেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে গরফা থানা এলাকার গরফা রোডে।
পুলিশ জানায়, অগ্নিদগ্ধ ব্যক্তির নাম কালেশ্বর রাম। তিনি এম আর বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর অবস্থা গুরুতর। ধৃত ছেলে অমিতকুমার রামকে সোমবার আলিপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এর দু’দিন আগেই শুক্রবার রাতে পারিবারিক অশান্তির জেরে পূর্ব যাদবপুর থানা এলাকার অহল্যানগরে বাবা বলাই ঢালিকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছিল ছেলে রাজারাম। বর্তমানে সে পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, কালেশ্বর কোনও কাজ করেন না। স্ত্রী এবং মেয়ে যাদবপুর স্টেশনের হকার। ছেলে অমিত একটি মোবাইল সারাইয়ের দোকানে কাজ করে। পুলিশের কাছে ধৃতের দাবি, প্রতিদিন তার বাবা মদ্যপান করে বাড়িতে ফিরে চিৎকার-চেঁচামেচি জুড়ে দিতেন। তা নিয়ে চলত নিত্য অশান্তি। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানায়, রবিবার দুপুরে মায়ের জন্য খাবার নিয়ে বাড়ি থেকে যাদবপুরে যান ধৃতের দিদি। ওই সময়ে বাড়িতে একাই ছিলেন কালেশ্বর। পরে সেখানে আসে অমিত। অভিযোগ, সে বাড়িতে এসেই দেখে, মাটিতে বসে চিৎকার করছেন কালেশ্বর। পুলিশ জানিয়েছে, অমিত বাবার কাছে জানতে চায়, কেন তিনি দিনের বেলায় নেশা করেছেন। তা নিয়ে বচসার মাঝেই অমিত ঘরের অন্য প্রান্তে থাকা কেরোসিন নিয়ে বাবার গায়ে ছুড়ে, তাতে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে জানায় পুলিশ।
তদন্তকারী এবং স্থানীয় সূত্রে খবর, আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পরেও ঘরে ছিল অমিত। দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে উঠতেই হাত দিয়ে তা নেভানোর চেষ্টা করে সে। তাতে তার দুই হাতও জখম হয়। এর পরে কালেশ্বরের চিৎকারে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। পুলিশও খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে অগ্নিদগ্ধ ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করে। পুলিশের দাবি, কালেশ্বর জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে ওই কাণ্ড করেছে। অভিযুক্তও সেই ঘটনার কথা স্বীকার করে নিয়েছে।