WB Tab Scam

বৈষ্ণবনগর থেকে ধৃত ট্যাব-কাণ্ডে

ট্যাব-কাণ্ডে কেন বার বার করে নাম জড়াচ্ছে ব্যাঙ্কের গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রগুলির—উঠছে সে প্রশ্ন। গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রগুলিতে পুলিশের পাশাপাশি ‘নজর’ বাড়াচ্ছে ব্যাঙ্কগুলি।

Advertisement

অভিজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২৪ ০৯:৫৯
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

ট্যাব-কাণ্ডে ফের নাম জড়াল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের (সিএসপি)। বুধবার রাতে মালদহের বৈষ্ণবনগরের ওই কেন্দ্রের মালিক মনোজ চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে শিলিগুড়ির সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। মনোজের গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে এক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য অ্যাকাউন্টে ট্যাবের টাকার লেনদেন হয় বলে দাবি পুলিশের। বৃহস্পতিবার দুপুরে শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে মনোজকে তোলা হলে, বিচারক পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।

Advertisement

ট্যাব-কাণ্ডে কেন বার বার করে নাম জড়াচ্ছে ব্যাঙ্কের গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রগুলির—উঠছে সে প্রশ্ন। গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রগুলিতে পুলিশের পাশাপাশি ‘নজর’ বাড়াচ্ছে ব্যাঙ্কগুলি। কী কাজ হয় গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে? কর্তৃপক্ষের দাবি, নতুন অ্যাকাউন্ট খোলা (জ়িরো ব্যালেন্স) হয়। অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার কার্ডের সংযোগ, টাকা লেনদেনের কাজও হয়। টাকা লেনদেনের উপরে কমিশন পান গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের মালিকেরা।

পুলিশের দাবি, এই পরিষেবার সুযোগ নিয়ে দুর্নীতিতে জড়াচ্ছেন গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের মালিকদের একাংশ। পুলিশ জানিয়েছে, ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে মালদহের ১৯৩ জন পড়ুয়ার ট্যাবের দশ হাজার টাকা ভিন্ন অ্যাকাউন্টে পৌঁছয়। সে অ্যাকাউন্টের উপভোক্তাদের অধিকাংশ সাধারণ মানুষ। মহিলার অ্যাকাউন্ট রয়েছে। গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের মালিকদের একাংশ সে অ্যাকাউন্টগুলি চিহ্নিত করে পড়ুয়াদের ট্যাবের টাকা তাতে পাঠিয়ে দিচ্ছে। উপভোক্তাকে ৫০০-১০০০ টাকা দিয়ে পুরো টাকা তুলে নিচ্ছে তারা। বৈষ্ণবনগরের পশ্চিম জেলেপাড়ার বাসিন্দা ধৃত মনোজকে জেরা করে এমনই তথ্য মিলেছে বলে দাবি পুলিশের। বৈষ্ণবনগর থেকে শিলিগুড়ি যাওয়ার পথে সংবাদ মাধ্যমের সামনে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে মনোজ। মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, “শিলিগুড়ির পুলিশ এক গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের মালিককে গ্রেফতার করেছে। জেলার ট্যাব-কাণ্ডের সঙ্গে তার যোগ রয়েছে কি না দেখা হচ্ছে।”

Advertisement

ট্যাব-কাণ্ডে গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রগুলির নাম জড়ানোয় অস্বস্তিতে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, জেলায় ৬৭৫টি গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র রয়েছে। মালদহের লিড ব্যাঙ্কের ম্যানেজার অমিতাভ কীর্তনীয়া বলেন, “গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রগুলির সঙ্গে ব্যাঙ্কের সরাসরি যোগ থাকে না। আরবিআই এবং আমাদের তরফে গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে নজরদারি চালানো হয়। প্রয়োজনে, নজরদারি বাড়ানো হবে।”

অন্য দিকে, ট্যাব-কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার দলুয়া হাটের বাসিন্দা ও মিরচা গোলগছ প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক‌ দিবাকর দাসের বেতন আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্কুল শিক্ষা দফতর। তবে দিবাকর প্রসঙ্গে জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) দুলাল সরকার কোনও মন্তব্য করতে চাননি। এ দিকে, বুধবার রাতে ইসলামপুর সাইবার থানা ও বৃহস্পতিবার বীরভূম সাইবার থানার পুলিশ এলাকায় অভিযান চালায়। এখনও অধরা অন্যতম অভিযুক্ত বাবুল হুসেন ওরফে বাবর। জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) মুরারিমোহন মণ্ডল বলেন, ‘‘বাবুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে আমাদের কাছে তথ্য নেই। ছুটির বিষয়টি স্কুল পরিচালন সমিতি দেখে।’’

সহ প্রতিবেদন: অভিজিৎ পাল

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement