কর্মকাণ্ড: মাঝেরহাট সেতু তৈরির কাজ চলছে
দেশ জুড়ে লকডাউন শুরু হওয়ার পরে এত দিন বন্ধ ছিল নতুন মাঝেরহাট সেতু নির্মাণের কিছুটা অংশের কাজ। সম্প্রতি লকডাউনের নিয়ম অনেকটা শিথিল হতেই সেই কাজ আবার শুরু হয়েছে।
পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, মাঝেরহাট সেতুর দু’প্রান্তের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আলিপুরের দিকে সেতুর অংশে নীল-সাদা রঙের প্রলেপও পড়েছে। তবে মার্চের শেষে লকডাউন শুরু হওয়ার পরে এত দিন রেললাইনের উপরে প্রায় ৮০ মিটার অংশে সেতুর ‘সুপারস্ট্রাকচার’ নির্মাণের কাজ বন্ধ ছিল। আজ, মঙ্গলবার থেকে শিয়ালদহ-বজবজ শাখায় এবং মাঝেরহাট চক্ররেলের উপরে ওই সুপারস্ট্রাকচার তৈরির কাজ শুরু হবে। এর জন্য নিয়ন্ত্রণ করা হবে ট্রেন চলাচল। সূত্রের খবর, ৮০ মিটার অংশকে ছ’টি ভাগে ভাগ করে এই কাজ হবে। প্রতিটি ভাগের কাজ শেষ হতে এক সপ্তাহ লাগবে বলে জানিয়েছেন সেতুর নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকেরা। সুপারস্ট্রাকচার তৈরির পাশাপাশি এই সময়ে সেতুর রেললাইনের অংশে লোহার ডেক বসানো হবে। একই সঙ্গে চলবে কেব্ল লাগানোর কাজ। ওই কাজ সম্পূর্ণ হলে সেতুর নীচে থাকা পুরনো স্তম্ভগুলি ভেঙে ফেলা হবে বলে পূর্ত দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে।
নবান্ন সূত্রের খবর, নতুন মাঝেরহাট সেতু তৈরি হচ্ছে বিদ্যাসাগর সেতুর ধাঁচে। যাকে বলা হয় ‘কেব্ল স্টার্টার ব্রিজ’। নকশা অনুযায়ী ৮০০ মিটার দীর্ঘ, চার লেনের নতুন মাঝেরহাট সেতুর প্রায় একশো মিটার অংশ চারটি স্তম্ভ এবং কয়েকটি কেব্লের মাধ্যমে দু’প্রান্ত থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকবে। মাঝের অংশের ভার থাকবে দু’প্রান্ত থেকে নেমে আসা কেব্লের উপরে। সেতুর দু’দিকে ওই স্তম্ভের কাজ শেষ। দু’প্রান্তের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের জন্য আপাতত বাকি আছে রেললাইনের উপরে সুপারস্ট্রাকচার তৈরির কাজ।
২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ভেঙে পড়ে মাঝেরহাট সেতুর একাংশ। ওই বিপর্যয়ের পরেই ঠিক হয়, ষাটের দশকে তৈরি হওয়া ওই সেতু ভেঙে সেখানে নতুন সেতু তৈরি করা হবে। প্রসঙ্গত, মাঝেরহাট সেতু ভাঙার পর থেকেই যাতায়াতের সমস্যায় পড়েছেন তারাতলা, বেহালা, পর্ণশ্রী, সরশুনা, ঠাকুরপুকুর, জোকা-সহ দক্ষিণ শহরতলি এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা। অতিরিক্ত সময় খরচ করে, ঘুরপথে তাঁদের কলকাতায় আসতে হচ্ছে।
কবে নাগাদ সুপারস্ট্রাকচার তৈরির কাজ শেষ হতে পারে? সেতুর নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকদের মতে, রেললাইনের উপরের অংশে ওই কাজ হতে প্রায় দেড় মাস সময় লাগবে। তাই জুলাইয়ের মধ্যে সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হবে বলে মনে করছেন তাঁরা।