গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
খাস কলকাতায় আবার এক তরুণীর শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটল। বিচার চাইতে ওই তরুণী কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। অভিযোগ, তাঁর বাড়ির দরজা ভেঙে মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে শ্লীলতাহানি করা হয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তা এবং তদন্তে ঢিলেমির অভিযোগও তুলেছেন তরুণী। বুধবার তাঁর মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের বেঞ্চে। আদালতের নির্দেশ, কলকাতা পুলিশের সহকারী কমিশনারের নজরদারিতে তদন্ত চলবে। পরবর্তী শুনানির দিন তদন্তের অগ্রগতি আদালতে জানাতে হবে।
মামলাকারী তরুণীর স্বামী আইএএস অফিসার। তরুণী নিজে একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত। আদালতে তিনি জানান, গত ১৫ জুলাই রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। সেই সময়ে মত্ত অবস্থায় এক ব্যক্তি তাঁর উদ্দেশে অশ্লীল ভাষায় কিছু মন্তব্য করেন। পরে তরুণীর পিছু নিয়ে তাঁর বাড়ির সামনেও পৌঁছে যান অভিযুক্ত। রাস্তা আটকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করা হয়। কোনও মতে নিজেকে বাঁচিয়ে বাড়িতে ঢুকে পড়েছিলেন বলে জানিয়েছেন তরুণী। সে সময়ে অভিযুক্তকে তিনি ধাক্কা মেরে ফেলে দেন।
তরুণীর অভিযোগ, সে দিন ভোরে আবার তাঁর বাড়ির সামনে ফিরে এসেছিলেন অভিযুক্ত। দরজা ভেঙে ঢুকে পড়েছিলেন বাড়ির ভিতর। তার পরেই বন্দুক তরুণীর মাথায় ঠেকানো হয় এবং তাঁর শ্লীলতাহানি করা হয়। অভিযুক্ত তাঁর সঙ্গে অশ্লীল আচরণ করেছিলেন বলেও আদালতে জানিয়েছেন তরুণী। অভিযোগ, ঘটনার কথা পুলিশকে জানালে তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়।
ঘটনার পরেই লেক থানা এলাকায় অভিযোগ দায়ের করেন তরুণী। অভিযোগ, পুলিশ প্রথমে তাঁর অভিযোগটি গ্রহণ করতেই চায়নি! পরে অভিযোগ গ্রহণ করা হলেও ঢিলেমি দেওয়া হয় তদন্তে। এই মামলার শুনানিতে আদালতের পর্যবেক্ষণ, পুলিশের তদন্তে বাড়তি নজরদারি প্রয়োজন। এর পরেই কলকাতার সহকারী পুলিশ কমিশনারকে তদন্তে নজরদারি চালানোর নির্দেশ দেন বিচারপতি। সেই সঙ্গে এই ঘটনায় রাজ্যের কাছেও একটি রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। আগামী ২৩ অগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
উল্লেখ্য, আরজি কর হাসপাতালে এক কর্তব্যরত চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় তোলপাড় পড়ে গিয়েছে শহরে। হাসপাতালগুলিতে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছে হাই কোর্ট। তার মাঝেই শহরে আবার এক শ্লীলতাহানির অভিযোগ প্রকাশ্যে এল।