শিল্পী সাহা।
ডেঙ্গি আক্রান্ত এক মহিলার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল নার্সিংহোমে। রবিবার, দক্ষিণ দমদমের নাগেরবাজার এলাকায়। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে নার্সিংহোমের সামনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন মৃতের পরিজনেরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ পৌঁছয়। দীর্ঘক্ষণ পুলিশ মোতায়েন ছিল সেখানে। পুলিশ সূত্রের খবর, রাত পর্যন্ত পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম শিল্পী সাহা (৫৪)। তিনি দক্ষিণ দমদমের তেলিপুকুরের বাসিন্দা। পরিবার সূত্রের খবর, গত ৩ তারিখ শিল্পী ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে নাগেরবাজারের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি হন। ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের দাবি, রবিবার সকালে আচমকাই তিনি ডেঙ্গি শক সিন্ড্রোমে চলে যান। হৃদ্যন্ত্র বিকল হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। মৃত্যুর শংসাপত্রে হৃদ্রোগ এবং ডেঙ্গি শক সিন্ড্রোমের উল্লেখ রয়েছে।
যদিও মৃতের পরিবারের দাবি, প্লেটলেট খুব কমেছে যে, তেমনটাও নয়। কখনও নার্সিংহোম থেকে বলা হয় লিভার সংক্রমিত হয়েছে। কখনও হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা বলা হয়েছিল। আরও অভিযোগ, অবস্থার অবনতি হলে যা পদক্ষেপ করা উচিত ছিল, তা করা হয়নি। রবিবার সকালে হাসপাতাল থেকে পরিবারকে জানানো হয়, রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। তাঁকে আরও ভাল চিকিৎসা পরিকাঠামোয় দিতে হবে। ওই নার্সিংহোমে সেই ব্যবস্থা ছিল না, এমনটাই দাবি পরিবারের। তাঁকে স্থানান্তরের জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে যোগাযোগ করার মাঝেই জানানো হয় যে রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের তরফে চিকিৎসক আশিসকুমার বালার দাবি, ডেঙ্গি (আইজিএম পজ়িটিভ) নিয়ে ৩ তারিখ ভর্তি হন ওই মহিলা। চিকিৎসায় সাড়াও দিচ্ছিলেন তিনি। এমনকি তাঁকে ছুটি দেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছিল। কিন্তু এ দিন সকালে তিনি ডেঙ্গি হেমারেজিক শক সিন্ড্রোমে চলে যান। আইসিইউ-এর জন্য অন্যান্য হাসপাতালের খোঁজ নেওয়া শুরু হলেও তাঁকে স্থানান্তর করা যায়নি। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ খারিজ করে তাঁর দাবি, ‘‘নার্সিংহোমের তরফে চিকিৎসা ঠিকঠাকই চলেছিল।’’
এ দিকে দক্ষিণ দমদম পুর এলাকায় এই নিয়ে ডেঙ্গিতে মৃতের সংখ্যা হল তিন। বর্তমানে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৩০-এর নীচে নেমেছে বলে পুরসভার দাবি। পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (স্বাস্থ্য) সঞ্জয় দাসের দাবি, পুর এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই কমেছে। তবুও ওই মহিলার মৃত্যু কেন হল? তাঁর চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।