মর্মান্তিক: এই ঘরেই পুড়ে মৃত্যু হয় প্রৌঢ়ার। মঙ্গলবার, দমদমের খলিসাকোটায়। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
মঙ্গলবার সকালে দাউ দাউ করে জ্বলছিল ছোট্ট বাড়িটা। ঘরের ভিতর থেকে শোনা যাচ্ছিল আর্ত চিৎকার। কিন্তু বাড়ির দরজা বাইরে থেকে বন্ধ। আগুন এতটাই ছড়িয়ে পড়েছিল যে, এলাকার লোকজন কাছে ঘেঁষতে পারেননি। আগুন আয়ত্তে আনার পরে দমকল যখন ঘরে ঢুকতে সমর্থ হয়, তত ক্ষণে জীবন্ত দগ্ধ হয়ে গিয়েছেন ৫৩ বছরের কৃষ্ণা চক্রবর্তী। পুলিশ তাঁর ঝলসানো দেহ উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠিয়েছে। দমদম থানার খলিসাকোটার এই ঘটনায় স্তম্ভিত এলাকার বাসিন্দারা।
পুলিশ জানিয়েছে, কৃষ্ণাদেবীর দাদা ঝন্টুবাবু রোজ কাজে যাওয়ার সময়ে দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দিতেন। ওই বাড়িতে প্রায় ৪০ লিটার কেরোসিন মজুত ছিল বলে জেনেছে পুলিশ। সেই কারণেই আগুন খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। দমকল তাড়াতাড়ি এলেও বাঁচানো যায়নি মহিলাকে।
দমদম থানার পুলিশ জানিয়েছে, কৃষ্ণাদেবী মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। দাদা ঝন্টুবাবুর সঙ্গেই থাকতেন তিনি। মানসিক হাসপাতালে দীর্ঘদিন তাঁর চিকিৎসাও চলেছে। তবে বেশ কিছু দিন ধরে বাড়িতেই ছিলেন ওই মহিলা। কৃষ্ণাদেবী মাঝেমধ্যেই বাড়ি থেকে পালিয়ে যেতেন বলে তাঁকে বাইরে থেকে তালাবন্ধ করে যেতেন ঝন্টুবাবু।
এ দিনও বোনকে বাইরে থেকে তালাবন্ধ করে গিয়েছিলেন ঝন্টুবাবু। রান্না চাপিয়েছিলেন কৃষ্ণাদেবী। তাঁদের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। রান্না থেকে শুরু করে লন্ঠন বা হ্যারিকেন জ্বালানোর জন্য বাড়িতে কেরোসিন মজুত করা থাকত। পুলিশ মনে করছে, অসাবধানতায় কোনও ভাবে কেরোসিনে আগুন লেগে যায়। তা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি কৃষ্ণাদেবী। আবার বাড়ি থেকে বেরোতেও পারেননি তিনি। ঝন্টুবাবু বলছেন, “এমন সর্বনাশ হবে জানলে তালা দিয়ে যেতাম না। বোন পালিয়ে গেলেও বেঁচে তো থাকত।”