Calcutta HighCourt

Calcutta High Court: তাঁর দেওয়া সব রায়ে স্থগিতাদেশ কেন? দেশের প্রধান বিচারপতির শরণাপন্ন কলকাতার বিচারপতি

কলকাতা হাই কোর্টের ইতিহাসে কার্যত নজিরবিহীন ঘটনা ঘটল বুধবার। স্কুলে শিক্ষক ও কর্মী নিয়োগ মামলায় চাঞ্চল্যকর মন্তব্য বিচারপতির।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২২ ১৩:২০
Share:

শিক্ষক নিয়োগ, গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি নিয়োগ মামলায় চাঞ্চল্যকর মন্তব্য হাই কোর্টের বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের। ফাইল ছবি।

কেন তাঁর দেওয়া রায়ে স্থগিতাদেশ দিচ্ছে কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ? এই প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির দ্বারস্থ হলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সম্পতি স্কুলে শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী নিয়োগের কয়েকটি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চ। কারণ, বিচারপতি মনে করেছিলেন, সেখানে বড় কোনও দুর্নীতি থাকতে পারে। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চে সিবিআই অনুসন্ধানের মামলায় স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। এর পর শিক্ষক নিয়োগ মামলায় এসএসসি-র তৎকালীন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিংহের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির হিসেব-নিকেশ চেয়েছিল বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চ। সেই নির্দেশেও ডিভিশন বেঞ্চে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে কার্যত ক্ষুব্ধ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।

Advertisement

এর পর শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপ দাবি করলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, কাদের সুবিধা পাইয়ে দিতে ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গল বেঞ্চের হাত বেঁধে দিচ্ছে? মঙ্গলবার নির্দেশ জারি করে, গত মাস দুয়েক নিয়োগ দুর্নীতিতে তাঁর দেওয়া চারটি সিবিআই অনুসন্ধানের মামলার নথি এবং সেগুলিতে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চের দেওয়া স্থগিতাদেশের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ও হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। বিচারপতির বক্তব্য, ‘‘দেশ দেখুক, বিচার করুক, বেআইনি চাকরি দেওয়া নিয়ে কী চলছে!’’ একই সঙ্গে এক আইনজীবী মন্তব্য ‘কথা হয়ে গিয়েছে, স্টে (স্থগিতাদেশ) হয়ে যাবে’ এই বক্তব্যের রেকর্ডিং ভার্চুয়াল শুনানির রেকর্ড থেকে বের করার কথা বলেন তিনি। বলেন, ‘‘বিচার করা হোক গোটা বিষয়টি।’’ একই সঙ্গে লিখিত প্রশাসনিক নির্দেশে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানান, তাঁর কাছে মঙ্গলবার এক আইনজীবী এসে এই সব মামলা নিয়ে এক প্রভাবশালী রাজনীতিকের হয়ে কথা বলতে এসেছিলেন। তাঁর কাছে হাত জোড় করে ক্ষমা চেয়ে বলেছেন, তাঁকে যেন মাফ করেন তিনি। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়ের কথায়,‘‘তাঁকে এক কাপ কফি খাইয়ে বলেছি, আপনি আসুন। যদি প্রধান বিচারপতি সেই ব্যক্তির নাম জানতে চান, আমি বলব।’’

পাশাপাশি, এসএসসি উপদেষ্টা শান্তি প্রসাদ সিংহের সম্পত্তির হিসেব নিয়ে তার দেওয়া নির্দেশের পাল্টা সিলবন্ধ খাম খোলা যাবে না বলে যে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ, সেই বিতর্কেও বিস্ফোরক অভিযোগ করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘আমার হাত বারবার বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি দেখার জন্য আমি কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন জানাচ্ছি। চাকরিতে যে দুর্নীতি হয়েছে, এই বিষয়টিও দেখুন।’’

Advertisement

উল্লেখ্য, বুধবার কলকাতা হাই কোর্টের ইতিহাসে এমনন ঘটনা কার্যত নজিরবিহীন, যেখানে তাঁর দেওয়া নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন কোনও বিচারপতি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement