বড়দিনে জমজমাট চিড়িয়াখানা। ছবি: পিটিআই।
বড়দিনের কলকাতা। উৎসবের মেজাজে শহর। চারপাশ নানা আলোয় আলোকিত। নানা সাজে সেজেছে কলকাতার বিভিন্ন প্রান্ত। শীতের আমেজকে গায়ে মেখে তাই সকাল থেকেই রাস্তায় নেমে পড়ে জনতা। উদ্দেশ্য ট্রেন-বাস-ট্যাক্সি-মেট্রো কিংবা প্রাইভেট গাড়ি চেপে নিজেদের গন্তব্যে পাড়ি দেওয়া। ভিড়ের মধ্যে অনেকটাই ছোটদের দখলে। কেউ কেউ মা-বাবা, পরিবারের সঙ্গে ঘুম ভাঙা চোখে ঢুলতে ঢুলতে হাজির চিড়িয়াখানায়। কারও গন্তব্য আবার ইকো পার্ক, নিকো পার্কে। বেলা যত বেড়েছে ততই ভিড় বেড়েছে কলকাতার রাস্তায়। শুধু কলকাতাবাসী নয়, শহরতলি থেকেও মানুষ ভিড় করেছেন শহরের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে। ইকো পার্ক থেকে শুরু করে সায়েন্স সিটি, জাদুঘর, ভিক্টোরিয়া— ভিড়ের নিরিখে কেউ এগিয়ে কেউ আবার অনেকটাই পিছিয়ে। বড়দিনে ভিড় মিটারে এ বার জিতল কে?
লাখ ছুঁতে না পারলেও এ বার সর্বোচ্চ ভিড়ের মাত্রা নেহাৎ কম নয়। তবে গত বারের হিসাবে কিছুটা কম। তবে ভারতীয় জাদুঘরের ভিড় গতবারের থেকে বাড়ল খানিক। গত বছর জাদুঘরে বড়দিনে লোক হয়েছিল সাত হাজার। এ বার সেই ভিড় বেড়ে দাঁড়িয়েছে আট হাজার ৬০১। তবে ভিড়ের নিরিখে একে বারেই অন্যদের মাত দিতে পারল না নিক্কো পার্ক। এ বছর সেখানে ভিড় হয়েছে সাড়ে সাত হাজার।
সায়েন্স সিটি হোক বা ভিক্টোরিয়া— শহরের দুই গন্তব্যকে ঘোরার তালিকায় রেখেছিলেন অনেকেই। তবে সায়েন্স সিটিতে গত বছরের তুলনায় এ বছর ভিড় কমেছে প্রায় পাঁচ হাজার। ২০২৩ সালে বাইপাসের ধারের এই দর্শনীয় স্থানে বড়দিনে জমায়েত হয়েছিল ২৫ হাজার ৪০০ মানুষের। এ বছর তা কমে দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৮৭৯। ভিক্টোরিয়াতে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। হিসাব বলছে, এ বছর সেখানে ৩৫ হাজার ৩১৯ জনের ভিড় হয়েছিল।
গত বারের মতো এ বছর ভিড়ের লড়াইয়ে জোর টক্কর ছিল চিড়িয়াখানা এবং ইকো পার্কের মধ্যে। শেষ পর্যন্ত সেরার মুকুট ধরে রাখল চিড়িয়াখানাই। তবে খুব একটা পিছিয়ে নেই ইকো পার্কও। শীতের রোদ গায়ে মেখে একই গন্তব্যে পৌঁছে সপ্তম আশ্চর্য ভ্রমণের আমেজ যদি পাওয়া যায়, তবে সেই সুযোগ ছাড়ে কে! ২০২৩ সালে ইকো পার্কে ভিড় করেছিলেন ৫৭ হাজার ৬০৩ জনের। এ বার সেই ভিড় দাঁড়াল ৫৫ হাজারে। অন্য দিকে, সকলকে পিছনে ফেলে ভিড়ের যুদ্ধে জয়ী হল চিড়িয়াখানা। গত বছরের তুলনায় ভিড় এ বার অনেকটাই বেড়েছে। ২০২৩ সালে আলিপুরের চিড়িয়াখানায় ভিড় জমিয়েছিলেন ৬৩ হাজার ৮২০ মানুষ। এ বছর এক ধাক্কায় সেই ভিড় বাড়ল সাত হাজার। হিসাব অনুযায়ী, চিড়িয়াখানায় এ বারের বড়দিনে ৭০ হাজার ২২৬ জনের ভিড় হয়েছিল।