স্যাম কনস্টাসকে (ডান দিকে) ধাক্কা মারার মুহূর্তে বিরাট কোহলি। ছবি: সমাজমাধ্যম।
মেলবোর্ন টেস্টের শুরুতেই পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল বিরাট কোহলি এবং স্যাম কনস্টাসের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে। দশম ওভারের পর অস্ট্রেলিয়ার তরুণ ক্রিকেটারকে কাঁধ দিয়ে ইচ্ছাকৃত ধাক্কা মারার অভিযোগ উঠেছিল কোহলির বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার জেরে শাস্তি পেতে পারেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক।
নিয়ম কী বলছে?
ক্রিকেট আইনের ২.১২ ধারা অনুযায়ী ক্রিকেটার, সাপোর্ট স্টাফ, আম্পায়ার, ম্যাচ রেফারি বা অন্য কারও (দর্শকও) সঙ্গে অনুপযুক্ত শারীরিক সংঘর্ষের ক্ষেত্রে শাস্তির বিধান রয়েছে। ক্রিকেটে অনুপযুক্ত শারীরিক সংঘর্ষের কোনও জায়গা নেই। যদি কোনও ক্রিকেটার নিয়ম ভেঙে ইচ্ছাকৃত, বেপরোয়া ভাবে বা অনিচ্ছাকৃত ভাবে কোনও ক্রিকেটার বা আম্পায়ারের সঙ্গে শারীরিক সংঘর্ষ করলে এই নিয়ম বলবৎ হবে। সেই মুহূর্তের পরিস্থিতি বিচার করে আম্পায়ার দেখতে পারেন যে অপরাধ ইচ্ছাকৃত ছিল কি না।
কোহলির ক্ষেত্রে কী হবে?
ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্ট কী ভাবে ঘটনাটি দেখছেন তার উপরে নির্ভর করছে। যদি পাইক্রফ্ট মনে করেন দু’জনেই লেভেল টু পর্যায়ের অপরাধ করেছেন তা হলে তিন বা চার ডিমেরিট পয়েন্ট দিতে পারেন। চার ডিমেরিট পয়েন্ট পেলে পরের টেস্টে নির্বাসিত হতে হবে কোহলিকে। লেভেল ওয়ান পর্যায়ের অপরাধের ক্ষেত্রে সাধারণত জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয়।
কোহলি আগে এমন করেছেন?
২০১৯ সালে বেঙ্গালুরুতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বিউরান হেনড্রিকসকে ধাক্কা দিয়েছিলেন কোহলি। একটি ডিমেরিট পয়েন্টও পেয়েছিলেন। অপরাধ স্বীকার করে নিয়েছিলেন বিরাট।
কখন ক্রিকেটারদের নির্বাসিত করা হয়?
২৪ মাসের মধ্যে চার বা তার বেশি ডিমেরিট পয়েন্ট পেলে নির্বাসন হয়।
ম্যাচ রেফারির সঙ্গে ভারতীয়দের সম্পর্ক কেমন?
২০২৩-এর মার্চে রবীন্দ্র জাডেজাকে একটি বিষয়ে প্রশ্ন করেছিলেন পাইক্রফ্ট। ফুটেজে দেখা গিয়েছিল সিরাজের হাত থেকে কিছুটা ক্রিম নিয়ে বাঁ হাতের তর্জনীতে লাগাচ্ছেন জাডেজা। পাইক্রফ্টকে জানানো হয় সেটি ব্যথা কমানোর ক্রিম। তাই কোনও শাস্তি হয়নি।
কী হয়েছিল ঘটনাটি?
ঘটনাটি ঘটেছে ১০ ওভারের পর। মহম্মদ সিরাজ সেই ওভার শেষ করার পর দিক পরিবর্তন করার জন্য হেঁটে আসছিলেন কোহলি। উল্টো দিক থেকে আসছিলেন কনস্টাসও। দু’জনের কাঁধে ধাক্কাধাক্কি হয়। কনস্টাসের বিষয়টি পছন্দ হয়নি। তিনি কোহলিকে কিছু একটা বলেন। পাল্টা কোহলিও রক্তচক্ষু দেখিয়ে কনস্টাসকে উত্তর দেন। বিষয়টি বেশি দূর গড়ায়নি। সতীর্থ ওপেনার উসমান খোয়াজা এসে কনস্টাসকে সরিয়ে নিয়ে যান। পাশাপাশি কোহলিকেও অনুরোধ করেন ঘটনাটি সেখানে শেষ করে দেওয়ার জন্য। ঝামেলা থামাতে এগিয়ে আসেন আম্পায়ারেরাও। বার বার সেই ঘটনার রিপ্লে দেখাতে থাকে সম্প্রচারকারীরা। সেখানে অবশ্য দেখা গিয়েছে, কনস্টাস মাথা নিচু করে ব্যাট হাতে যাচ্ছিলেন। কোহলিই যাওয়ার পরে দিক পরিবর্তন করে কনস্টাসের কাছে গিয়ে তাঁকে গিয়ে ধাক্কা মারেন।