প্রতীকী ছবি।
সরকারি স্কুল, কলেজ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাড়ি বা ছাদের কাছে যদি কোনও ওভারহেড হাই টেনশন বা লো টেনশেন লাইন থাকে, তা নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ জারি হল। বুধবার বিদ্যুৎ দফতরে একটি জরুরি বৈঠকের পরেই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা ওই নির্দেশ জারি করেছে। বিদ্যুৎ কর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রত্যেক জেলার জেলাশাসক ও অন্য পদস্থ অফিসারদের সঙ্গে কথা বলে ঝুঁকিপূর্ণ স্কুল-কলেজ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জায়গাগুলিকে চিহ্নিত করে দ্রুত পদক্ষেপ করতে। বণ্টন সংস্থার বিশেষ একটি তহবিল থেকে ওই খাতে প্রয়োজনীয় খরচও করা হবে।
সম্প্রতি দক্ষিণ ২৪ পরগনার উস্তির বাণেশ্বরপুরে একটি স্কুলের ছাদে পিকনিক করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঘটনায় এক শিশু-সহ তিন জনের মৃত্যু হয়। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, স্কুলটির পাশের ছাদেই খুব কম উচ্চতায় ছিল হাইটেনশন লাইন। খেলার ছলে শিশুটি ওই তারে হাত দিয়ে ফেলে। বিষয়টি জানতে পেরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেন প্রশাসনকে। তার পরেই দফতরের শীর্ষ কর্তারা বৈঠক করে হাইটেনশন লাইন সরাতে উদ্যোগী হন।
নির্দেশ জারির পাশাপাশি হাইটেনশন লাইন সরানো দরকার, এমন স্কুল বা কলেজ চিহ্নিত হলে তা ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সরিয়ে ফেলতে হবে বলে স্পষ্ট জানানো হয়েছে। সমস্ত রিজিয়োনাল ম্যানেজারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সরানোর কাজ শেষ করে ১৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বণ্টন সংস্থার সদর দফতর বিদ্যুৎ ভবনে বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠাতে।
উল্লেখ্য, বেসরকারি উদ্যোগে নগরায়নের সঙ্গে সঙ্গে গত কয়েক বছর ধরেই বিভিন্ন জেলায় হাই টেনশন লাইন রাজ্যের বিদ্যুৎ কর্তাদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছিল।
বিদ্যুৎ কর্তাদের অভিযোগ, অনেক জায়গাতেই নির্মাণ আইন না মেনেই হাই টেনশন লাইনের গা ঘেঁষে বাড়ি তৈরি হয়। সংশ্লিষ্ট পুরসভাগুলিও সেই নির্মাণ নকশা অনুমোদন করে। অথচ নিয়ম হচ্ছে, হাই টেনশন বা লো টেনশন লাইনের থেকে নির্দিষ্ট দূরত্ব রেখেই নির্মাণ কাজের নকশা করতে হবে। এ ব্যাপারে পুরসভাগুলিকে নকশা অনুমোদনের ব্যাপারে আরও কড়া নজরদারি চালানোর আর্জিও আগে জানিয়েছিল বণ্টন সংস্থা। কিন্তু উস্তির ঘটনার পরে বিদ্যুৎ কর্তারা এ বার রাজ্য জুড়ে সরকারি স্কুল, কলেজ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিকে বিপদ মুক্ত করার কাজে কোমর বেঁধে নামতে চলেছেন।