—প্রতীকী চিত্র।
স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে পরিষেবা দিতে হলে এ বার থেকে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের নাম নথিভুক্ত থাকতে হবে এই রাজ্যের মেডিক্যাল কাউন্সিলে। এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের অনুমোদন নেই, এমন চিকিৎসককে দিয়ে যাতে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের কাজ করানো না হয়, সে বিষয়েও সব হাসপাতালকে সতর্ক করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতরের পর্যবেক্ষণ, অনেক সময়ে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প সম্পর্কিত কোনও অভিযোগের তদন্ত কিংবা বিল করার সময়ে চিকিৎসকের খোঁজ পেতে সমস্যা হয়। কারণ, বহু ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক শুধু তাঁর রেজিস্ট্রেশন নম্বর লিখে ছেড়ে দেন। এ বার ওই নম্বর ধরে খোঁজ করতে গিয়ে দু’টি নামের সন্ধান মিলছে। যাঁদের মধ্যে এক জনের রেজিস্ট্রেশন ভিন্ রাজ্যে। তিনি পশ্চিমবঙ্গে প্র্যাক্টিস করলেও এখানকার মেডিক্যাল কাউন্সিলে নাম নথিভুক্ত করাননি। এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘‘এমন ক্ষেত্রে কোন চিকিৎসক কাজটি করেছেন, তা চিহ্নিত করতে সমস্যায় পড়তে হয়। ফের সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের কাছ থেকে রিপোর্ট চাইতে হয়।’’ তাই এ বার দু’টি নির্দেশিকা জারি করে স্বাস্থ্য দফতর বিষয়গুলি আরও স্পষ্ট করেছে। দফতরের অন্দরের খবর, অন্য রাজ্যের রেজিস্ট্রেশন নম্বর নিয়ে এ রাজ্যের বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় কোনও চিকিৎসক রোগী দেখতে পারবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশিকায় ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট আইনের উল্লেখ করে জানানো হয়েছে, ভিন্ রাজ্যের রেজিস্ট্রেশন নম্বর নিয়ে এখানে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে চাইলে কাজ শুরুর ছ’মাসের মধ্যে এ রাজ্যের মেডিক্যাল কাউন্সিলে নাম নথিভুক্ত করাতে হবে। কিন্তু স্বাস্থ্য দফতরের পর্যবেক্ষণ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ-সহ অন্য রাজ্যের মেডিক্যাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রেশন নম্বর নিয়ে এখানে এসে অনেক চিকিৎসকই বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে যুক্ত হয়ে আছেন। তাই বলা হয়েছে, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে চিকিৎসা দিতে গেলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের অবশ্যই ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রেশন থাকতে হবে। অন্যথায় তাঁর করা যে কোনও চিকিৎসা বা অস্ত্রোপচারের বিল আটকে যেতে পারে।
পাশাপাশি বলা হয়েছে, রাজ্যের সব চিকিৎসককে বাধ্যতামূলক ভাবে স্বাস্থ্যসাথী পোর্টালে নাম নথিভুক্ত করাতে হবে। দিতে হবে আধার ও প্যান কার্ডের নম্বর। এর ফলে সরকারের থেকে ভাতা নিয়েও কোনও চিকিৎসক স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে বেসরকারিতে কাজ চালিয়ে গেলে তা জানা যাবে। স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলেন, ‘‘কোনও অনৈতিক কাজ করলেও যেমন ধরা যাবে, তেমনই ভিন্ রাজ্যের চিকিৎসকদেরও চিহ্নিত করা যাবে এই ব্যবস্থায়।’’