Behala

অকেজো পাম্প, বৃষ্টির জল নামল না সাত দিনেও

ভারী বৃষ্টি হলে কলকাতা পুরসভার ১২৮ এবং ১২৯ নম্বর ওয়ার্ডে, বেহালা এলাকায় জল জমা নতুন ঘটনা নয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২১ ০৭:০১
Share:

ফাইল চিত্র।

ভারী বৃষ্টি হলে কলকাতা পুরসভার ১২৮ এবং ১২৯ নম্বর ওয়ার্ডে, বেহালা এলাকায় জল জমা নতুন ঘটনা নয়। কিন্তু গত সপ্তাহের মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টির জেরে এলাকায় যে জল জমেছে, তা নামেনি এক সপ্তাহ পরেও। এমনকি, রবীন্দ্রনগরে ১২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কোঅর্ডিনেটরের বাড়ির সামনের রাস্তা মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত ডুবে ছিল জলে। এত দিন ধরে জল জমে থাকায় দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ স্থানীয় বাসিন্দারা। দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে এলাকায় আন্ত্রিক এবং ডায়েরিয়া ছড়াতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন তাঁরা। রবীন্দ্রনগর লাগোয়া মহেশতলা পুরসভার অধীন অমর্ত্যনগরের বেশ কিছু এলাকাও এখনও জলমগ্ন। অনেক বাড়িতেও ঢুকে গিয়েছে জল।

Advertisement

বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, সোমবার বিকেলে জল কিছুটা নেমেছিল। কিন্তু ওই রাতে আবার বৃষ্টি শুরু হওয়ায় জলমগ্ন হয়ে পড়ে ১২৯ নম্বর ওয়ার্ডের আদর্শনগর, নবপল্লি এবং রবীন্দ্রনগরের বিস্তীর্ণ এলাকা। স্থানীয় ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটর সঞ্চিতা দাস বলেন, ‘‘মাঝেমধ্যে নাগাড়ে বৃষ্টি হওয়ায় ওয়ার্ডের বেশ কিছু জায়গায় এখনও জল জমে আছে। তবে আশা করছি, শীঘ্রই জল নেমে যাবে।’’

পাশাপাশি, ওই অঞ্চলের একাধিক বাড়িতে জল ঢুকে বিপত্তি বেড়েছে বাসিন্দাদের। রবীন্দ্রনগরে সপরিবার ভাড়া থাকেন পেশায় রিকশাচালক অনন্ত বসু। তাঁর বাড়ির মধ্যে এখনও জমে রয়েছে জল। খাওয়া থেকে শুরু করে রান্না— সব চলছে খাটের উপরে। অনন্তের অভিযোগ, পুরসভার পানীয় জলের কলগুলি ডুবে থাকায় জল কিনে
খেতে হচ্ছে।

Advertisement

১২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কোঅর্ডিনেটর, সিপিএমের রত্না রায় মজুমদারেরও অভিযোগ, ওই ওয়ার্ডের বেলেডাঙা, ১২ ফুট, ১৬ ফুট, এস এস পল্লি থার্ড লেন, পারুই দাসপাড়া, কালীপুর ইত্যাদি এলাকায় মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত জল থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকাবাসী। লকগেট বন্ধ থাকায় জল বেরোতে পারছে না।

জল নামতে এত দেরি হচ্ছে কেন?

কলকাতা পুরসভার নিকাশি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত, প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য তারক সিংহ বলেন, ‘‘জল জমে থাকার
পিছনে খাল সংস্কার না হওয়া একটা কারণ তো বটেই। পাশাপাশি, অধিকাংশ পাম্প কাজ করেনি। বেহালার সমস্ত জল মণিখালি পাম্পিং স্টেশনের মাধ্যমে গঙ্গায় গিয়ে পড়ে। ওই পাম্পিং স্টেশনে আটটি পাম্পের মধ্যে চলেছে মাত্র দু’টি।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘আটটি পাম্প চালাতে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ প্রয়োজন, তার অনুমোদন ছিল না। ফলে সব পাম্প একসঙ্গে
চালাতে গেলে সেগুলি বন্ধ হয়ে যেত। এখন সিইএসসি-কে বলে সব পাম্প চালানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, দ্রুত জল নেমে যাবে।’’

পাম্পিং স্টেশনগুলির একাধিক পরিকাঠামোগত খামতির কথা তুলে ধরে মঙ্গলবার পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিমকে রিপোর্ট দিয়েছেন তারকবাবু। তাঁর অভিযোগ, বৃষ্টির সময়ে চেতলা ও মণিখালি পাম্পিং স্টেশনে গিয়ে কোনও পুরকর্মীর দেখা মেলেনি। পাম্পিং স্টেশনগুলির নজরদারি আরও বাড়ানোর কথাও রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন তিনি। জল জমার সমস্যা রুখতে এ দিন পুর ভবনে ঠিকাদারদের সঙ্গে বৈঠকও করেন তারকবাবু।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement