জমা জলের ভোগান্তি কাটাতে কাজ শুরু করে দিল পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। —ফাইল চিত্র।
সামনেই বর্ষার মরসুম। তীব্র গরম থেকে রক্ষা পেতে বর্ষার আগমনের অপেক্ষায় রাজ্যবাসী। কিন্তু সেই ভরা বর্ষায় যাতে পুরসভা এলাকাগুলিতে জমা জল নিয়ে বাসিন্দাদের ভোগান্তি না হয়, সেই লক্ষ্যে কাজ শুরু করে দিল পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। সূত্রের খবর, কলকাতা পুরসভার সঙ্গে রাজ্যের একাধিক পুরসভাকে সম্প্রতি একটি চিঠি পাঠিয়েছে পুর দফতর। সেই চিঠিতে বলা হয়েছে, বৃষ্টিতে এলাকার কোন কোন জায়গায় বেশি জল জমে, তা চিহ্নিত করে জানাতে হবে। পুরসভা থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সেই সব এলাকায় যাতে দ্রুত জমা জল নামিয়ে দেওয়া যায়, সেই ব্যবস্থাও করা হবে। এই কাজে পুরসভা এলাকায় থাকা নর্দমা, খাল এবং নিকাশি নালাগুলি কী অবস্থায় রয়েছে, তা-ও জানাতে হবে। যাবতীয় তথ্য হাতে পাওয়ার পর পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের শীর্ষ আধিকারিকেরা পুরসভা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। এ ক্ষেত্রে কলকাতা পুরসভা এবং তৎসংলগ্ন পুরসভাগুলিতে নজর দেওয়া হচ্ছে। কারণ, এই সমস্ত এলাকায় জমা জলের চিত্র বার বার পুর প্রশাসনকে কাঠগড়ায় তোলে। তাই এ বার সেই সব অভিযোগ সমূলে নাশ করতেই এই বিষয়ে পুর দফতর উদ্যোগী হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
দফতর সূত্রে খবর, পুরসভা এলাকার কোন জায়গায় কতটা জল জমে, তা বিস্তারিত জানাতে হবে সংশ্লিষ্ট পুরসভাকে। এই কাজ সম্পন্ন করতে একটি নির্দিষ্ট নির্দেশনামাও দেওয়া হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, যে সব এলাকায় বৃষ্টিতে বাসিন্দাদের বাড়িতে জল ঢুকে যায়, সেগুলিকে ‘লাল’ এলাকা বলে চিহ্নিত করতে হবে। যে সমস্ত এলাকায় ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে জল জমে থাকে সেগুলিকে ‘হলুদ’ এলাকা বলে চিহ্নিত করতে হবে। এই রিপোর্ট তৈরির পাশাপাশি বৃষ্টির জমা জল নিয়ে তৈরি হওয়া সমস্যার সমাধান করতে পুরসভাগুলিকে একটি নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করার নির্দেশ দিয়েছে দফতর। এক আধিকারিকের কথায়, যাবতীয় তথ্য হাতে পাওয়ার পর পুরসভা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করবেন পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের শীর্ষকর্তারা। সে ক্ষেত্রে দ্রুত জমে থাকা জল কী ভাবে বার করতে হবে, তার পরিকল্পনা করা হবে।
জমা জলের সবচেয়ে বড় সমস্যা রয়েছে কলকাতা পুরসভা এলাকায়। রাজ্যের পুরমন্ত্রী হওয়ার পাশাপাশি কলকাতার মেয়রও ফিরহাদ হাকিম। তাই নিজের দফতরকে এ বিষয়ে সক্রিয় করে কলকাতাবাসীকে বর্ষার মরসুমে জমা জলের হাত থেকে সুরাহা দিতে চান তিনি। সেই একই সমস্যা থেকে অন্য পুরসভা এলাকার বাসিন্দাদেরও যাতে দ্রুত মুক্তি দেওয়া যায়, সেই কারণেই এলাকা চিহ্নিতকরণের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। যাতে কোন এলাকায় বেশি জল জমে, তা সহজেই জানা যায়, এবং দ্রুত জমা জল নামিয়ে সাধারণ মানুষের সমস্যার সমাধান করা যায়। তাই বর্ষার আগমনের আগেই পুরসভাগুলিকে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ফেলতে বলেছে পুর দফতর।