কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা। — ফাইল চিত্র।
মঙ্গলবার রাত ১১টা ২০ মিনিট নাগাদ শিয়ালদহ থেকে আলিপুরদুয়ারের উদ্দেশে ছাড়ার কথা ছিল পদাতিক এক্সপ্রেসের। কিন্তু সেই সময়সূচি কিছুটা বদলানো হল। রাত ১টা নাগাদ পদাতিক ছাড়বে শিয়ালদহ থেকে।
১২৫২৩ নিউ জলপাইগুড়ি-নিউ দিল্লি সুপারফাস্টের সূচি বদল করা হয়েছে। দুপুর ১২টায় ট্রেনটি ছাড়ে।
শতাব্দী-সহ ৬টি এক্সপ্রেস ট্রেন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে ১৫৭১৯ কাটিহার-শিলিগুড়ি ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস, ১৫৭২০ শিলিগুড়ি-কাটিহার এক্সপ্রেস। আপ ও ডাউন হাওড়া-এনজেপি শতাব্দী এক্সপ্রেস এবং আপ-ডাউন জোগাবাড়ি-শিলিগুড়ি টাউন ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস।
রাজধানী, দার্জিলিং মেল, পদাতিক-সহ একাধিক এক্সপ্রেসের যাত্রাপথ বদল করা হয়েছিল। আলুয়াবাড়ি রেল জংশন-বাগডোগরা-শিলিগুড়ি- নিউ জলপাইগুড়ি লাইন দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যাত্রাপথ বাতিলের তালিকায় রয়েছে, ২০৫০৪ নিউ দিল্লি-ডিব্রুগড় রাজধানী এক্সপ্রেস, ১৩১৭৬ শিলচর-শিয়ালদহ কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস, ১২৫২৩ নিউ জলপাইগুড়ি-নিউ দিল্লি সুপারপাস্ট এক্সপ্রেস, ০১০৬৬ আগরতলা-ছত্রপতি শিবাজি মহারাজা টার্মিনাল এক্সপ্রেস, ১৩২৮১ ডিব্রুগড়-রাজেন্দ্রনগর টার্মিনাল এক্সপ্রেস, ডিব্রুগড়-চণ্ডীগঢ় এক্সপ্রেস, ০৫৬৫৬ গুয়াহাটি-জম্মু তাওয়াই এক্সপ্রেস, ০৫৬১০ গুয়াহাটি-হাদাপসার সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেস, ০৪৬৭৯ গুয়াহাটি-বৈষ্ণো দেবী কাতরা এক্সপ্রেস, ১৫৯০৯ ডিব্রুগড়-লালগড় আওয়াধ অসম এক্সপ্রেস, ১২৩৪৫ হাওড়া-গুয়াহাটি সরাইঘাট এক্সপ্রেস, ১৩১৪১ শিয়ালদহ-নিউ আলিপুরদুয়ার তিস্তা তোর্সা এক্সপ্রেস, ১৫৬৫৭ কামাখ্যা ব্রহ্মপুত্র মেল, ১৫৯৬১ হাওড়া-ডিব্রুগড় কামরূপ এক্সপ্রেস, ১৩১৪৭ শিয়ালদহ-বামানহাট উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস, ১২৩৪৩ শিয়ালদহ-হলদিবাড়ি এক্সপ্রেস, ১২৩৭৭ পদাতিক এক্সপ্রেস-সহ আরও কয়েকটি ট্রেন।
আপ এবং ডাউন লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হলেও এখনই সব ট্রেন ওই লাইন দিয়ে চালানো হচ্ছে না। সোমবারের মতো মঙ্গলবার বেশ কয়েকটি ট্রেনের যাত্রাপথ বদল করা হল।
আপ লাইনে ট্রেন চলাচল শুরুর ঘণ্টাখানেক পর ডাউন লাইনে পরিষেবা শুরু করল রেল। দুর্ঘটনা কবলিত এক্সপ্রেস এবং মালগাড়ির কামরাগুলি সরিয়ে লাইন মেরামতি করে আবার পরিষেবা চালুর কাজ মঙ্গলবার সকালেই শেষ হয়। দুর্ঘটনার পর থেকেই ওই লাইনে ট্রেন চলাচল পুরো বন্ধ হয়ে য়ায়। সোমবারের পর মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৪২ মিনিট নাগাদ ওই ডাউন লাইনে প্রথম যাত্রিবাহী ট্রেন চালাল রেল। আওয়াধ-অসম এক্সপ্রেস খুব ধীর গতিতে ওই লাইন দিয়ে পাস করানো হয়।
কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার সকালে প্রথমে আপ লাইন ধরে যাত্রিবাহী ট্রেন চলে। খুব ধীর গতিতে কামাখ্যা গান্ধীধাম এক্সপ্রেসকে পার করানো হয়। সোমবারের পর এই প্রথম কোনও যাত্রিবাহী ট্রেন দুর্ঘটনাস্থল পেরোল।
ট্রেন দুর্ঘটনার কারণে সোমবার একাধিক ট্রেন বাতিল করা হয়েছিল। একই সঙ্গে বেশ কয়েকটি ট্রেনের রুট পরিবর্তনও করা হয়েছিল। যার জেরে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। মঙ্গলবার শতাব্দী এক্সপ্রেস বাতিলের পর আবার যাত্রী হয়রানির আশঙ্কা করা হচ্ছে। রেল ইতিমধ্যেই যাত্রীদের কাছে ক্ষমা চেয়েছে।
কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার জেরে মঙ্গলবার বাতিল হল হাওড়া-নিউ জলপাইগুড়ি শতাব্দী এক্সপ্রেস। মঙ্গলবার দুপুর ২টো ২৫ মিনিট নাগাদ হাওড়া থেকে ট্রেনটি ছাড়ার কথা ছিল। কিন্তু সোমবারের দুর্ঘটনার কারণে শতাব্দী এক্সপ্রেস বাতিল করল রেল।
আহত যাত্রীদের মধ্যে এক জন রেল পুলিশের কাছে সোমবারের অভিযোগ দায়ের করেন। গাফিলতি, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট-সহ একাধিক অভিযোগ তোলা হয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির বেশ কয়েকটি ধারায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে দুর্ঘটনার অভিযোগ জানানো হয়েছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করবে পুলিশ।