Ultadanga Flyover

Ultadanga flyover: মন্ত্রী ‘ফিট সার্টিফিকেট’ দিলেও সংস্কার হবে উল্টোডাঙা উড়ালপুলের

পরিদর্শনে গিয়ে উল্টোডাঙা উড়ালপুলকে কার্যত ‘ফিট সার্টিফিকেট’ দিয়ে দিলেন কলকাতা পুরসভার মেয়র তথা কেএমডিএ-এর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২২ ০৫:১৫
Share:

উল্টোডাঙা উড়ালপুল পরিদর্শনে ফিরহাদ হাকিম। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

পরিদর্শনে গিয়ে উল্টোডাঙা উড়ালপুলকে কার্যত ‘ফিট সার্টিফিকেট’ দিয়ে দিলেন কলকাতা পুরসভার মেয়র তথা ‘কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি’র (কেএমডিএ) চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘‘কোথাও কোনও ফাটল নেই। ফলে যান চলাচল বন্ধেরও ব্যাপার নেই। অকারণ ভয় ছড়ানো হচ্ছে।’’ যদিও কেএমডিএ-র আধিকারিকেরা জানালেন, এখনই যান চলাচল বন্ধের প্রয়োজন না পড়লেও ওই উড়ালপুলের কিছু জায়গায় সংস্কারের কাজ করা দরকার। দিনকয়েকের মধ্যেই দ্রুত তা করে ফেলা হবে।

Advertisement

মঙ্গলবার রাতে উল্টোডাঙা উড়ালপুলের একাংশে ফাটল দেখা গিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। এক ব্যক্তির তোলা ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই শোরগোল পড়ে যায়। বুধবার সকালে সেখানে পরিদর্শনে যান কেএমডিএ-র কর্তারা। পরে তাঁরা জানান, বাইপাসের দিক থেকে লেক টাউনে যাওয়ার পথে গোলাঘাটার কাছে উড়ালপুলের যে অংশ নামছে, সেখানে বাঁ দিকের দেওয়ালের এক জায়গায় ফাটল ধরেছে। সেখানে থাকা স্তম্ভের পাশের ইটের গাঁথনিও দুর্বল হয়ে পড়েছে বলে মনে করা হয়। স্তম্ভটিও কিছুটা হেলে রয়েছে বলে জানান ওই আধিকারিকেরা। সব দেখে রিপোর্ট দেবেন বলে জানান তাঁরা। সেই রিপোর্ট সেতু-বিশেষজ্ঞ কমিটির কাছে পাঠানো হবে ও তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়। ফলে প্রশ্ন ওঠে, ফের কি যান চলাচল বন্ধ হতে চলেছে ওই উড়ালপুলে?

উল্টোডাঙা উড়ালপুল তৈরি করেছিল ম্যাকিনটোশ বার্ন। রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব কেএমডিএ-র। তবে গত ১০ বছরে ওই উড়ালপুল নিয়ে একাধিক বার প্রশ্ন উঠেছে। ২০১১ সালে যান চলাচল শুরু হওয়ার দু’বছরের মধ্যেই ভেঙে পড়ে উড়ালপুলের একটি ডেক। ২০১৯ সালে ফাটল দেখা যায়। ২০২১-এ সংস্কার শেষ হওয়ার পরে মঙ্গলবার ফের ফাটলের অভিযোগ ওঠে। যা প্রশ্ন তোলে কেএমডিএ-র ভূমিকা নিয়ে। এর পরেই এ দিন উড়ালপুল পরিদর্শনে যান ফিরহাদ। সঙ্গে ছিল পুরসভা ও কেএমডিএ-র যৌথ দল। উড়ালপুলের বিভিন্ন অংশ খুঁটিয়ে দেখেন তাঁরা। পরীক্ষা করা হয় সেটির কম্পন। তার পরেই মন্ত্রী জানান, ওই উড়ালপুলে যান চলাচলে বাধা নেই। ফিরহাদ বলেন, ‘‘যে অংশ নিয়ে কথা হচ্ছে, সেটি উড়ালপুলের অংশই নয়। গোলাঘাটার কাছে যেখানে উড়ালপুলের একটি দিক নামছে, তার নীচের অংশে যাতে কোনও অসামাজিক কাজকর্ম না হয়, তার জন্য জায়গাটা পাঁচিল তুলে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ওইটা না থাকলেও উড়ালপুলের কিছু যায় আসে না।’’

Advertisement

কেএমডিএ-র আধিকারিকেরা অবশ্য জানাচ্ছেন, যে কোনও সেতু বা উড়ালপুলের ওই অংশটি গুরুত্বপূর্ণ। এমনই এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘সেতু বা উড়ালপুলের রাস্তায় অন্তত চার-পাঁচ মিটার চললে মাটি থেকে কয়েক ফুট উপরে ওঠা যায়। যেখানে সেতু বা উড়ালপুলের রাস্তা এসে মিলছে, সেই জায়গাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওই অংশে উড়ালপুলের নীচে বহু সময়েই ভার ধরে রাখার জন্য কিছু দিয়ে ভর্তি করা হয়। ওই জায়গাকেই ‘অ্যাবাটমেন্ট পিয়ের’ বলা হয়। উল্টোডাঙা উড়ালপুলের ক্ষেত্রে লেক টাউনে যাওয়ার দিকের অংশে ওই জায়গাটিকে বালির বস্তা ফেলে ভর্তি করা হয়েছিল। এর পরে দু’দিকে পাঁচিল তুলে দেওয়া হয়। কম্পনের ফলে ওই পাঁচিলই দুর্বল হয়েছে।’’

আর এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এর সঙ্গে চাপ বেড়েছে উড়ালপুলের ওই অংশের ‘রিইনফোর্স আর্থ’ (আর ই) ওয়ালের। ফলে যান চলাচল বন্ধ না করলেও এই দু’টিরই দ্রুত সংস্কার প্রয়োজন।’’ কেএমডিএ-র এক ইঞ্জিনিয়ার জানাচ্ছেন, ট্র্যাফিক পুলিশের সঙ্গে কথা বলে উড়ালপুলের ওই অংশের কাজ করে ফেলা হবে। রাতে যান চলাচল কম থাকে, তাই তখনই সংস্কার করা হতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement