(বাঁ দিকে) আলোলিকা ঘোড়ুই এবং পরিচয় পণ্ডা (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের ঝাঁজ ক্রমশ বাড়ছে। শুক্রবার রাতে তাঁদের অনশনমঞ্চে যোগ দিলেন আরও দুই জন। বর্তমানে ওই মঞ্চে অনশনরত চিকিৎসকের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল আট। এ ছাড়াও, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের দুই জুনিয়র ডাক্তারও ‘আমরণ অনশন’ করছেন।
১০ দফা দাবিতে শনিবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে ধর্মতলায় আমরণ অনশন শুরু করেন কলকাতার বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের ছ’জন জুনিয়র ডাক্তার। স্নিগ্ধা ছাড়াও সেই তালিকায় রয়েছেন তনয়া পাঁজা, সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা, অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়, অর্ণব মুখোপাধ্যায় এবং পুলস্ত্য আচার্য। রবিবার অনশনে যোগ দিয়েছিলেন আরজি করের জুনিয়র চিকিৎসক অনিকেত মাহাতোও। বৃহস্পতিবার রাতে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় অনশনরত অনিকেতকে আরজি কর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তাঁকে ধরলে অনশনকারীর সংখ্যা ন’জন। ঘটনাচক্রে, অনশনকারীদের মধ্যে আরজি করের কেউ রইলেন না। গত ৫ অক্টোবর প্রথম যখন ছয় অংশনকারীর নাম ঘোষণা করা হয়েছিল, সেই তালিকায় ছিল না কোনও আরজি করের জুনিয়র ডাক্তার। তবে ৬ অক্টোবর আরজি করের চিকিৎসক অনিকেত মাহাতো অনশনে যোগ দেন। বৃহস্পতিবার অসুস্থতার কারণে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। শুক্রবার দু’জন জুনিয়র ডাক্তার অনশনে যোগ দিলেও তাঁরা কেউই আরজি করের নন। অর্থাৎ, যে আরজি কর থেকে চিকিৎসকদের আন্দোলনের সূত্রপাত, সেই আরজি করের কেউ রইলেন না অনশনকারীদের মধ্যে।
গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
শুক্রবার রাতে ধর্মতলায় ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট’-এর তরফে জানানো হয়, আরও দুই জন জুনিয়র ডাক্তার আমরণ অনশন শুরু করছেন। তাঁরা হলেন পরিচয় পণ্ডা এবং আলোলিকা ঘোড়ুই। পরিচয় শিশুমঙ্গল হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত। তিনি ওই হাসপাতালের ইএনটি (নাক, কান, গলা) বিভাগের পিজিটি-র দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া। আর কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের সার্জারি বিভাগের প্রথম বর্ষের পিজিটি আলোলিকা। তাঁরা জানান, সরকার যত দিন পর্যন্ত না তাঁদের দাবি মেটাচ্ছেন তত দিন এ ভাবেই জীবনকে বাজি রেখে এগিয়ে যাবেন একে একে।
গত দু’মাস ধরেই আরজি করে চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় উত্তাল রাজ্য। আঙুল উঠেছে রাজ্যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বেহাল দশার দিকেও। প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালন করেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। বুধবার রাতে মুখ্যসচিবের সঙ্গে স্বাস্থ্য ভবনে বৈঠকে বসেছিলেন আন্দোলনকারীরা। কিন্তু তা ফলপ্রসূ হয়নি বলেই দাবি তাঁদের। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, সরকার নতুন কিছু বলছে না। শুধু মৌখিক আশ্বাস দিয়ে অনশন তুলে নেওয়ার কথা বলছে। যদিও অনশন যে এ ভাবে উঠবে না, তা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা।
রবিবার সর্বভারতীয় চিকিৎসক সংগঠন আইএমএ-র (ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন) বেঙ্গল শাখা কলকাতা-সহ জেলায় জেলায় ১২ ঘণ্টার প্রতীকী অনশনের ডাক দিয়েছে। ডাক্তার দ্বৈপায়ন মজুমদার জানান, আগামী রবিবার সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত গোটা রাজ্যে জুড়ে এই অনশন চলবে। তিনি আরও জানান, এর পরেও কোনও সুরাহা না হলে বিকল্প পন্থা তাঁরা ভাববেন।