মর্মান্তিক: দুর্ঘটনার পরে আনাজের লরিটি। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল দুই যুবকের। গুরুতর জখম এক মহিলা। সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে মহেশতলা থানা এলাকার সম্প্রীতি উড়ালপুলে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ আনাজ বোঝাই একটি ছোট ট্রাক বজবজের দিক থেকে কলকাতার দিকে আসছিল। মহেশতলা থানার জলখুড়া এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেটি উল্টে যায়। ওই ট্রাকের উপরে বসে ছিলেন শেখ আসগর (৩৫) ও শেখ আক্তার (৩২) নামে দুই ভাই। ট্রাকটি উল্টে যেতে দু’জনেই উড়ালপুলের উপর থেকে নীচে বজবজ ট্রাঙ্ক রোডে গিয়ে পড়েন। ঘটনাস্থলেই তাঁদের মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, ছোট ওই ট্রাকে আনাজের সঙ্গে প্রচুর পরিমাণ ডাব বোঝাই করা হয়েছিল। ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি ওজন চাপানোর ফলেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় সেটি। চালকের কেবিনে মৃত দুই ভাইয়ের মা-ও ছিলেন। তিনিও গুরুতর ভাবে জখম হয়েছেন। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বিদ্যাসাগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের বাড়ি নোদাখালি থানার বিড়লাপুর এলাকায়। ভোরবেলা ট্রাকে আনাজ ও ডাব বোঝাই করে কলকাতার পথে রওনা হয়েছিলেন মা ও দুই ছেলে। চালকের কেবিনে জায়গা না হওয়ায় দুই ভাই আনাজের ডালার উপরেই বসে পড়েন। গাড়িটি খুব দ্রুত গতিতে উড়ালপুলের উপর দিয়ে যাচ্ছিল। তদন্তকারী এক অফিসার বলেন, ‘‘সম্প্রীতি উড়ালপুলে কয়েকটি ছোট ছোট বাঁক রয়েছে। তাই ওই উড়ালপুলে খুব দ্রুত গতিতে গাড়ি চালালে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। জলখুড়া এলাকায় তেমনই একটা বাঁক ছিল। সেখানেই নিয়ন্ত্রণ হারায় ট্রাকটি। চালক আচমকা ব্রেক কষায় সেই ঝাঁকুনিতে ট্রাকের উপরে বসে থাকা আসগর ও আক্তার ছিটকে নীচে পড়ে যান।’’
আরও পড়ুন: ৮ হাজার পুরোহিতকে ভাতা দেওয়ার ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘‘আচমকা উড়ালপুলের উপরে বিকট একটা শব্দ হয়। তার পরেই মাটিতে এসে পড়েন দুই যুবক। আমরা সঙ্গে সঙ্গে মহেশতলা থানায় ফোন করে খবর দিই। পুলিশ এসে ওই দুই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে যায়। চালক এবং ওই দুই যুবকের মাকেও উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় তারা। পরে গাড়িটি মহেশতলা থানায় নিয়ে আসা হয়।
আরও পড়ুন: রাজ্যে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার পার, স্বস্তি দিচ্ছে সুস্থতার হার
এই ঘটনার পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সকালের দিকে অধিকাংশ মালবাহী গাড়িই ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত বোঝা চাপিয়ে সম্প্রীতি উড়ালপুল দিয়ে যাতায়াত করে। পুলিশের নজরদারি নেই বললেই চলে। ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার এক কর্তা বলেন, ‘‘এ দিন সকালে ওই এলাকায় পুলিশি নজরদারির কী অবস্থা ছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’