পরিবেশবান্ধব পরিবহণে জোর দিতে চাইছেন পরিবহণ মন্ত্রী। প্রতীকী ছবি।
শহর কলকাতার ঐতিহ্য ট্রাম। কিন্তু এখন সেই ঐতিহ্যের ট্রামরুট কমতে কমতে দু’য়ে এসে ঠেকেছে। ট্রামের সেই সমস্ত পরিত্যক্ত রুটে ট্রলি বাস চালানো যায় কি না, সে ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা শুরু করল পরিবহণ দফতর। ট্রাম চলাচল বন্ধ হয়ে গেলেও রয়ে গিয়েছে ওভারহেড তার। সেখান থেকে বিদ্যুৎ নিয়েই চলবে ট্রলি বাস। সরাসরি ওভারহেড থেকে বিদ্যুৎ নেবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এই বাসগুলি। তবে ট্রলি বাসের ক্ষেত্রে একটি অতিরিক্ত সুবিধা রয়েছে। ট্রলি বাস ট্রাম লাইন ছাড়াও চলাচল করতে পারে ৷ কম খরচ, দূষণহীন, পরিবেশবান্ধব এই বাস চালানো গেলে সব ক্ষেত্রে লাভ হবে। এমনটাই মনে করছে পরিবহণ দফতর। পেট্রল ও ডিজেলের মতো জ্বালানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে পরিবহণ পরিষেবা সচল রাখতে নাভিশ্বাস উঠছে পরিবহণ দফতরের। তাই দ্রুত কোনও বিকল্প পরিবহণের সন্ধান চান তাঁরা।
ইতিমধ্যেই রাজ্যে অল্প সংখ্যায় চালু হয়েছে সিএনজি বাস পরিষেবা। আরও বেশি নতুন পরিষেবা শুরু করতে চায় পরিবহণ দফতর। তাই ট্রলি বাস তাঁদের ভাবনায়। শুধু ইলেকট্রিক নির্ভর নয়, ট্রলি বাসে থাকছে ব্যাটারির সুবিধাও। যখন বিদ্যুতের সাহায্য নিয়ে এই বাস চলবে তখন ব্যাটারি চার্জ হয়ে যাবে। ওভারহেড তার না পেলেও, ব্যাটারির সাহায্যেও বাসটি চালানো যাবে।
পরিবহণ দফতরের এক কর্তার কথায়, জ্বালানির দাম ক্রমাগত বাড়ছে। তাই ই-বাস, ই-অটোর উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু চার্জিং স্টেশন পর্যাপ্ত পরিমাণে নেই। তাই ট্রলি বাস আনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আপাতত পরীক্ষামূলক ভাবে একটি ট্রলি বাস কলকাতার রাস্তায় নামানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষামূলক প্রয়োগ সফল হলে পরিষেবা বাড়ানোর কথা ভাবা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
ট্রলি বাসকে ‘ট্র্যাকলেস ট্রলি’ও বলা হয়। কারণ ট্রামের তার থেকে বিদ্যুৎ নিলেও বাসটি চালাতে নির্দিষ্ট কোনও ট্র্যাকের প্রয়োজন পড়ে না। কারণ এই বাসে রাবারের টায়ারও লাগানো থাকে। পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, প্রথমে ইউক্রেন থেকে আনার কথা ছিল বাসটি। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য সেই পরিকল্পনা পরিবর্তন করা হয়েছে। এখন এই বাসটি পোল্যান্ড থেকে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পরিবহণ দফতরের কর্তারা। শহরের বিভিন্ন জায়গায় ট্রামের ট্র্যাক পাতা রয়েছে। এর বেশির ভাগই এখন আর ব্যবহার হয় না। তাই কম খরচে পরিবেশবান্ধব পরিবহণে জোর দিতে চাইছেন পরিবহণ মন্ত্রী।