রাজনৈতিক পরিচয় না দেখে দোষীদের শাস্তির কথা বলেছেন মহুয়া। ফাইল ছবি।
হাঁসখালিতে কিশোরী গণধর্ষণ ও তার মৃত্যুর ঘটনা প্রসঙ্গে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা মন্তব্যে ‘বাক্রুদ্ধ’ হয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন চিত্রপরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। মঙ্গলবার কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র হাঁসখালিতে ওই নির্যাতিতার বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে দেখা করেন। এর পরেই মহুয়ার ভূয়সী প্রশংসা করে ফেসবুকেই পোস্ট করেন সৃজিত। লেখেন, ‘‘ধন্যবাদ মহুয়া মৈত্র।’’
নদিয়ার হাঁসখালিতে ১৪ বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। তার পর রক্তক্ষরণে নাবালিকার মৃত্যু হলে প্রমাণ লোপাটের জন্য দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পুরো ঘটনায় মূল অভিযুক্তের তালিকায় রয়েছেন এক তৃণমূল নেতার ছেলে। তবে এই ঘটনায় কেন নির্যাতিতার পরিবার পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে দেরি করল তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি, ওই অভিযোগের সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। সেই প্রসঙ্গে সৃজিত সোমবার রাতেই লিখেছিলেন, ‘হাঁসখালির ধর্ষণের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী যে ধরনের আপত্তিকর এবং অসংবেদনশীল মন্তব্য করেছেন, তা অভাবনীয়।’ লেখেন, তিনি ‘হতবাক এবং বাক্রুদ্ধ।’
মঙ্গলবার হাঁসখালিতে নির্যাতিতার বাড়িতে গিয়েছিলেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া। সেখানে তিনি দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়ে বলেন, ‘‘অভিযুক্তের রাজনৈতিক পরিচয় যাই হোক, সে দুষ্কৃতী। এমন ঘটনা সরকার বিন্দুমাত্র বরদাস্ত করবে না (জিরো টলারেন্স)। নির্যাতিতার দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ পকসো আইনের বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু করেছে। নাবালিকার সম্মতিক্রমে যদি যৌনসম্পর্ক হয়, তা হলেও সেটা ধর্ষণ। কে কী ভাবে ওই পরিবারকে ভয় দেখিয়েছে, তা-ও পুলিশ খতিয়ে দেখছে।’’ তাঁর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সৃজিতের ফেসবুক পোস্ট, ‘‘এই মন্তব্যের জন্য মহুয়া মৈত্রকে ধন্যবাদ। এ বার সুযোগ সন্ধানীদের নীরব থাকা উচিত।’’
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার হাঁসখালি ধর্ষণ মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, আদালতের নজরদারিতেই এই মামলার তদন্ত হবে। আদালতকে তদন্তের অগ্রগতি সংক্রান্ত রিপোর্ট দেবে সিবিআই। পাশাপাশি আগামী ২ মে-র মধ্যে একটি প্রাথমিক রিপোর্ট দিতে হবে জানিয়েছে আদালত।