ফাইল চিত্র।
কলকাতা পুরসভার দেখানো পথ অনুসরণ করতে চাইছে ত্রিপুরা প্রশাসন।
প্লাস্টিক বর্জ্যের প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে শহরকে প্লাস্টিকমুক্ত করতে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে কলকাতা পুরসভা। স্তূপীকৃত বর্জ্যের স্থায়ী প্রক্রিয়াকরণের উদ্দেশ্যে সম্প্রতি ধাপায় দু’টি প্লান্টের উদ্বোধন হয়েছে। পুরসভা সূত্রের খবর, নবনির্মিত ওই দুই প্লান্টের বিষয়ে জানতে পেরেই ত্রিপুরার পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর সম্প্রতি যোগাযোগ করেছিল কলকাতা পুরসভার সঙ্গে। ধাপার মতো প্লান্ট ত্রিপুরাতেও কী ভাবে চালু করা যায়, তা জানতে পুরসভার জঞ্জাল অপসারণ বিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গেও কথা বলেন ওই রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের আধিকারিকেরা।
পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য এবং জঞ্জাল অপসারণ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত দেবব্রত মজুমদার শুক্রবার বলেন, ‘‘ধাপায় বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের প্লান্ট উদ্বোধনের পরের দিনই ত্রিপুরার নগরোন্নয়ন দফতর থেকে আমাকে ফোন করা হয়েছিল। ধাপায় আমরা যে পদ্ধতিতে স্তূপীকৃত বর্জ্যের প্রক্রিয়াকরণ শুরু করেছি, সেই পদ্ধতি ওরাও অনুসরণ করতে চায়। আমরা প্রাথমিক রিপোর্ট ইতিমধ্যেই ওদের পাঠিয়েছি।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, ত্রিপুরার পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের অধীন ‘স্বচ্ছ ভারত’ প্রকল্পের প্রজেক্ট ম্যানেজার সৌপায়ন সাঁতরা আগেই কলকাতা পুরসভাকে ইমেল করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চেয়েছিলেন। এ দিন ত্রিপুরা থেকে ফোনে সৌপায়নবাবু বলেন, ‘‘ভারত সরকারের লক্ষ্য, প্লাস্টিকমুক্ত দেশ গড়ে তোলা। জমে থাকা প্লাস্টিক বর্জ্য পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তুলতে কলকাতা পুরসভা ভাল কাজ করছে। ওদের কাজের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ আমাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমি গোটা বিষয়টি জানতে চেয়ে কলকাতা পুরসভার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। ওরা প্রাথমিক ভাবে কিছু তথ্য পাঠিয়ে আমাদের সাহায্য করেছে। আমরা আগরতলা-সহ অন্যান্য শহরে এই ধরনের প্রকল্প গড়ে তুলতে চাই।’’
কলকাতা পুরসভা এলাকার যাবতীয় জঞ্জাল ফেলা হয় ই এম বাইপাসের ধাপায়। পুরসভা সূত্রের খবর, সপ্তাহখানেক আগে ধাপায় উদ্বোধন হওয়া দু’টি প্লান্টের মধ্যে একটি স্তূপীকৃত সাধারণ বর্জ্যের প্রক্রিয়াকরণের জন্য। অন্যটি ব্যবহৃত হবে প্লাস্টিক বর্জ্যের প্রক্রিয়াকরণের কাজে। পুরসভার জঞ্জাল অপসারণ বিভাগের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে স্তূপীকৃত বর্জ্যের পুনর্ব্যবহার যেমন করা যাবে, তেমনই নির্মাণ বর্জ্যের প্রক্রিয়াকরণ করে পুনর্ব্যবহারযোগ্য নির্মাণ সামগ্রীও মিলবে। এর পাশাপাশি, নয়া প্লান্ট চালু হওয়ার ফলে ধাপায় যে বিপুল পরিমাণ জঞ্জালের পাহাড় জমে গিয়েছে, তারও ভার কিছুটা লাঘব হবে।
কলকাতা পুরসভার এই কর্মকাণ্ডে মুগ্ধ ত্রিপুরার পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের সচিব কিরণ গেটে। ফোনে তিনি বলেন, ‘‘প্লাস্টিক বর্জ্য পুনর্ব্যবহারের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। ত্রিপুরায় পরিবেশ রক্ষার উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। এই কাজে কলকাতা পুরসভার দেখানো পথ খুব কাজে লাগবে আমাদের।’’