নজরে: নথি পরীক্ষা করা হচ্ছে এমন সব গাড়িরই। ফাইল চিত্র
ভুয়ো আইএএস কাণ্ডের পরে কোনও রকম ঝুঁকি নিতে চাইছেন না লালবাজারের পুলিশকর্তারা। তাই নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে যাঁরা গাড়িতে লাল বা নীল আলো লাগিয়ে যাতায়াত করছেন, তাঁদের আটকাতে তৎপর হয়েছে পুলিশ। তারই অঙ্গ হিসেবে সোমবার দিনভর অবৈধ ভাবে লাল ও নীল বাতি লাগানো গাড়ির বিরুদ্ধে চলল পুলিশি অভিযান। কড়াকড়ির হাত থেকে রেহাই পেলেন না বিভিন্ন সরকারি দফতরের আধিকারিকেরাও।
এ দিন সকাল থেকে যাদবপুর, ঢাকুরিয়া, রুবি, জোড়াবাগান, শ্যামবাজার, উল্টোডাঙা-সহ শহরের বিভিন্ন রাস্তায় হাজির ছিলেন ট্র্যাফিক গার্ডের আধিকারিকেরা। রাস্তা দিয়ে কোনও লাল বা নীল বাতি লাগানো গাড়ি যেতে দেখলেই সেটিকে দাঁড় করিয়ে নথিপত্র পরীক্ষা করেছেন তাঁরা। বাতি লাগানোর অনুমতি আছে কি না, তা জানতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চাওয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রে সেই কাগজ দেখাতে না পারায় খুলে নেওয়া হয় বাতি। এই তালিকায় যেমন ছিল পুলিশ স্টিকার লাগানো গাড়ি, তেমনই ছিল বিভিন্ন সরকারি দফতরের আধিকারিকের গাড়িও। কয়েকটি ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট গাড়ির চালক বা আরোহী পুলিশের সঙ্গে তর্ক জুড়লে তাঁদের জুটেছে কড়া ধমক।
উল্লেখ্য, ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জন দেবের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই লাল ও নীল বাতি লাগানো গাড়ি পরীক্ষার উপরে জোর দিতে শহরের সব ট্র্যাফিক গার্ডকে নির্দেশ দেয় লালবাজার। ওই নির্দেশে বলা হয়, দেবাঞ্জনের মতো আর কেউ বেআইনি ভাবে গাড়িতে বাতি লাগিয়ে ঘুরছেন কি না, তা জানতে লাল ও নীল বাতি লাগানো গাড়ি দেখলেই সেটি আটকে নথিপত্র পরীক্ষা করতে হবে। সেই মতো গত দু’দিন কলকাতা পুলিশের বিভিন্ন ট্র্যাফিক গার্ডের তরফে একাধিক রাস্তায় লাল ও নীল বাতি লাগানো গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সেই অভিযান চলে এ দিনও। দেখা যায়, লাল বা নীল আলো লাগানো গাড়ি গেলে সেটির নম্বর লিখে রাখছেন পুলিশকর্মীরা। কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত তিন দিনে শহরে ১৯১টি গাড়ি থেকে লাল ও নীল বাতি খোলা হয়েছে। এ দিন সাউথ-ইস্ট ট্র্যাফিক গার্ডের তরফে সর্বাধিক ১৯টি গাড়ির বাতি খোলা হয়। উপযুক্ত নথি দেখাতে না পারায় যাদবপুর ট্র্যাফিক গার্ড ১২টি গাড়ি থেকে বাতি খুলে নেয়। জোড়াবাগান ট্র্যাফিক গার্ডের তরফে ১৪টি গাড়ির মাথায় লাগানো আলো খুলে নেওয়া হয়। কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘অবৈধ ভাবে যাঁরা গাড়িতে নীল ও লাল বাতি ব্যবহার করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে এই অভিযান নিয়মিত চলবে। যাঁদের বাতি লাগানোর অনুমতি আছে, তাঁদেরকেও প্রয়োজনীয় নথি সঙ্গে রাখার জন্য বলা হয়েছে।’’