সেই পোস্টার। নিজস্ব চিত্র
মার্চের শেষ সপ্তাহে লকডাউন শুরুর পর থেকে প্রায় সাড়ে তিন মাস বন্ধই রয়েছে এশিয়ার বৃহত্তম হাট বলে পরিচিত হাওড়ার মঙ্গলাহাট। অথচ খুলে দেওয়া হয়েছে মেটিয়াবুরুজ, অঙ্কুরহাটি-সহ একাধিক হাট। অবিলম্বে হাট খোলার দাবিতে এ বার পোস্টার পড়ল মঙ্গলাহাটে। ব্যবসায়ী সংগঠনের অভিযোগ, চরম দুর্দশায় দিন কাটছে হাটের সঙ্গে জড়িত প্রায় এক লক্ষ ব্যবসায়ীর। প্রশাসনের সব স্তরে তাঁরা হাট চালু করার আবেদন জানালেও সুরাহা হয়নি। প্রশাসনের বক্তব্য, যেখানে মঙ্গলাহাট বসে সেটি কন্টেনমেন্ট জ়োন। পাশেই রয়েছে হাওড়া জেলা হাসপাতাল-সহ একাধিক প্রশাসনিক ভবন। করোনা সংক্রমণ ক্রমশ বেড়ে চলার এই পরিস্থিতিতে কোনও ভাবেই হাট চালুর অনুমতি দেওয়া যাবে না।
পয়লা জুন থেকে ধাপে ধাপে হাওড়া শহরে সমস্ত দোকানপাট, বাজার খুলে দেওয়া হলেও মঙ্গলাহাট চালু করার অনুমতি মেলেনি। মাসের পর মাস হাট বন্ধ থাকায় বস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে জড়িত লোকজনেরা কেউ এখন ভ্যান চালাচ্ছেন, কেউ আনাজ বিক্রি করছেন। মঙ্গলাহাট ব্যবসায়ী সংগঠনের সম্পাদক শম্ভুনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘কয়েক লক্ষ মানুষের পেটের ভাত জোগাড় হয় এই হাট থেকে। অথচ অন্য সব হাট খুললেও সংক্রমণের দোহাই দিয়ে বন্ধ রাখা হয়েছে মঙ্গলাহাট।’’
কেন চালু হচ্ছে না মঙ্গলাহাট? জেলা প্রশাসন ও পুলিশের বক্তব্য, হাটে স্বাভাবিক কেনাবেচা চালু হলে এত মানুষের জমায়েত
হবে যে দূরত্ব-বিধি বজায় রাখা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। হাওড়ায় এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি করোনা। উপরন্তু, যেখানে হাট বসে সেটি কন্টেনমেন্ট জ়োনের আওতায়। পাশেই রয়েছে হাওড়া জেলা হাসপাতাল, আদালত, পুলিশ কমিশনার ও জেলাশাসকের অফিস, পুর ভবন-সহ জেলার প্রধান কার্যালয়গুলি। ফলে হাট পুরোদমে চালু হলে মারাত্মক ভাবে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেই প্রশাসনের কর্তাদের মত।
হাওড়া জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘করোনা সংক্রমণের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল হাওড়া জেলা হাসপাতাল। ফের তেমন পরিস্থিতি যাতে না-হয়, তা আগে দেখা হবে। তাই এখনই হাট চালু করা যাবে না।’’
‘হাওড়া হাট সমন্বয় কমিটি’র পক্ষে দেবাশিস ঘোষ বলেন, ‘‘অঙ্কুরহাটি, মেটিয়াবুরুজ বা হরিসা হাট চালু হয়ে গিয়েছে। ফলে আমাদের এত দিনের ধরাবাঁধা ক্রেতারা অনেকেই বাধ্য হয়ে সেখানে যাচ্ছেন।’’ তাঁর দাবি, কী ভাবে স্বাস্থ্য-বিধি মেনে হাট চালু করা যায় সেই বিষয়ে তাঁরা প্রশাসনকে সব রকম সাহায্য করতে প্রস্তুত। শুধু আর্জি, প্রশাসন এক বার মানবিক দৃষ্টিতে বিষয়টি দেখুক।