university

Alia University: ‘গাল লাল করে দেব!’ আলিয়ায় উপাচার্যের ঘরে ঢুকে তাণ্ডব তৃণমূল ছাত্রনেতার

অধ্যক্ষকে উদ্দেশ্য করে যুবককে বলতে শোনা যায়, ‘‘আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বেহাল অবস্থার জন্য তুই দায়ী। আমি জেল-জরিমানার জন্য তৈরি।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২২ ১৪:০০
Share:

তৃণমূল ছাত্রনেতার ভিডিয়ো ঘিরে নিন্দার ঝড়। ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োর স্ক্রিনশট।

‘‘ওই গালে দুটো চড়িয়ে দেব। আমার চড়ে প্রচুর লাগে। যে ক’টা তোর ছেলে আছে জিজ্ঞেস করে নিবি।’’ ঘটনাস্থল আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ঘর। বক্তা তৃণমূল ছাত্রনেতা গিয়াসুদ্দিন মণ্ডল (যদিও তৃণমূলের দাবি, ওই ছাত্রের সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই)। আর যাঁর উদ্দেশ্যে এমন শাসানি, তিনি আর কেউ নন, স্বয়ং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মহম্মদ মণ্ডল। এই তাণ্ডব-ভিডিয়ো নেটমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। শিক্ষকের সঙ্গে এমন ব্যবহারের ঘটনায় নিন্দা সব মহলে।
সম্প্রতি পাঁচ পড়ুয়ার পিএইচডি-তে সুযোগ পাওয়া নিয়ে ঝামেলার সূত্রপাত। গিয়াসুদ্দিন নামে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন সভাপতির দাবি, দুর্নীতিতে অভিযুক্ত উপাচার্য। তিনি পাঁচ পড়ুয়াকে অনৈতিক ভাবে পিএইচডি-তে সুযোগ করে দিয়েছেন। তাঁরা পরীক্ষা দিয়েছেন বটে। কিন্তু প্রশ্নপত্র পেয়ে গিয়েছিলেন অনেক আগেই। এ নিয়েই তাঁরা ‘প্রতিবাদ’ জানাতে উপাচার্যে ঘরে গিয়েছিলেন।

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, গিয়াসুদ্দিনদের প্রতিবাদের ভাষা নিয়ে। আনন্দবাজার অনলাইন ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই না করলেও গিয়াসুদ্দিন যে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন তাতে ভাইরাল ভিডিয়োটিকে তিনি সাজানো বলেননি। বরং জানিয়ে দেন, এটাই তাঁর প্রতিবাদের ভাষা। ভাইরাল ভিডিয়োয় শোনা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে ঘিরে অশ্রাব্য গালাগাল করছেন তিনি। ছাপার অযোগ্য ভাষায় উপাচার্যকে গালাগাল করতে শোনা যায় ওই বহিষ্কৃত ছাত্রনেতাকে। উপাচার্যকে উদ্দেশ্য করে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বেহাল’ অবস্থার জন্য তুই দায়ী। আমি জেল-জরিমানার জন্য তৈরি। জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা আছে।’’ ওই যুবকের পিছন থেকে একটি ছেলেকে বলতে শোনা যায়, ‘‘তোমাকে বহিষ্কার করেছিল। ওকে বলো।’’ তার পর ভিডিয়োয় দেখা যায়, উপাচার্যকে ঘিরে তাণ্ডব করছেন তাঁরা। আর চেয়ারে মুখে হাত দিয়ে বসে আছেন উপাচার্য।

Advertisement

আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পর রাজ্যের শিক্ষার পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। উপাচার্যের ঘরে ঢুকে তাঁকে শাসানি দেওয়া যুবক ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র। ২০১৮ সালে একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য তাঁকে বহিষ্কার করেন। এই ভাইরাল ভিডিয়োর প্রেক্ষিতে গিয়াসুদ্দিনের সঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘‘এটা আমার প্রতিবাদ। আমি ওঁর গায়ে হাত তুলিনি।’’ তাঁর দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের জন্য তাঁর কেরিয়ার খারাপ হয়েছে। তা ছাড়া উপাচার্য দুর্নীতিগ্রস্ত। তিনি যা করেছেন, তার জন্য অনুতপ্ত নন বলেও জানিয়ে দেন তিনি। অন্য দিকে, গিয়াসুদ্দিনের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান জেনারেল সেক্রেটারি তথা তৃণমূল ছাত্রনেতা ওয়াদিল আলম। তাঁর দাবি, ‘‘গিয়াসুদ্দিন এখন বিজেপি-তে রয়েছে।’’ তিনি এই ঘটনার নিন্দাও করেন।

এ নিয়ে প্রতিক্রিয়ার জন্য উপাচার্যকে ফোন করা হয়। তাঁর ফোন বেজে গেলেও ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করলেও তার উত্তর আসেনি।

Advertisement

আরও পড়ুন:

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement