মৃতদেহ নিয়ে রাস্তা অবরোধ করেন পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র
স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসা করাবেন জেনে কোনও বেসরকারি হাসপাতালই ভর্তি নিতে চায়নি বলে অভিযোগ। পাঁচ হাসপাতাল ঘুরে বেড তো দূর অস্ত্, প্রাথমিক চিকিৎসাই মিলল না বলে রোগীর পরিবারের দাবি। এই ভাবে ১৪ ঘণ্টা ধরে কার্যত বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগ উঠল দুর্গাপুরের জব্বরপল্লিতে। রবিবার এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়াল এলাকায়।
শনিবার সাইকেল নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে একটি মোটর বাইকের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন নির্মল মণ্ডল। বছর বাষট্টির ওই বৃদ্ধকে চিকিৎসার জন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখান থেকে তাঁকে স্থানান্তর করা হয় অন্য একটি হাসপাতালে। ওই ভাবে একটির পর একটি হাসপাতালে ঘুরে কোথাও তাঁকে ভর্তি করানো যায়নি বলে পরিবারের অভিযোগ। পরিবারের দাবি, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসা হবে শুনেই কোনও হাসপাতাল দুর্ঘটনায় আহত রোগীকে ভর্তি নেয়নি। কার্যত বিনা চিকিৎসায় রবিবার ভোরে মৃত্যু হয় তাঁর।
দুর্গাপুরের আশিস মার্কেটে একটি ঘড়ির দোকান রয়েছে পেশায় ব্যবসায়ী নির্মলের। শনিবার দুপুরে দোকান বন্ধ করে সাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। আচমকা একটি মোটর বাইক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা মারে নির্মলকে। সাইকেল থেকে ছিটকে পড়েন তিনি। প্রথমে তাঁকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
সেখান থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু ওই হাসপাতালে পরিকাঠামো নেই বলে রোগীকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এর পর বর্ধমানের অনাময় সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় নির্মলকে। কিন্তু সেখানে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে চিকিৎসা হবে শুনেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বেঁকে বসেন বলে অভিযোগ। এর পর নিয়ে যাওয়া হয় দুর্গাপুরের আর একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে ভর্তি করতে করতে না করতেই রবিবার ভোরে মৃত্যু হয় বৃদ্ধের।
পরিবারের অভিযোগ, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসা হবে শুনে এতগুলো হাসপাতাল একজন দুর্ঘটনাগ্রস্ত বৃদ্ধের চিকিৎসা করেনি। ভোর তিনটে নাগাদ হাসপাতালের বাইরে গাড়িতেই মারা যান নির্মল। এর পর মৃতদেহ নিয়ে জব্বরপল্লী রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন মৃতের পরিজনরা। ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। পরিবারকে ক্ষতিপূরণ এবং রাস্তায় স্পিড ব্রেকার বসানোর আশ্বাস দিলে এই অবরোধ ওঠে।