Garia Unnatural Death

কে বা কারা ভয় দেখাত সুমনকে, এখনও হদিস পায়নি পুলিশ

গত বুধবার নরেন্দ্রপুর থানা এলাকার গড়িয়া স্টেশন সংলগ্ন একটি আবাসনের ফ্ল্যাট থেকে বাবা, মা ও ছেলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। ফ্ল্যাটের তিন জায়গায় তিনটি দেহ ঝুলছিল বলে জানায় পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সোনারপুর শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৪ ০৭:১৬
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

নরেন্দ্রপুরের আবাসনে মৃত সুমনরাজ মৈত্রকে কে বা কারা ভয় দেখাচ্ছিল, ২৪ ঘণ্টা পরেও তার হদিস পায়নি পুলিশ। ওই আবাসনের অন্য বাসিন্দারাও জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে তাঁদের কোনও ধারণা নেই।

Advertisement

গত বুধবার নরেন্দ্রপুর থানা এলাকার গড়িয়া স্টেশন সংলগ্ন একটি আবাসনের ফ্ল্যাট থেকে বাবা, মা ও ছেলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। ফ্ল্যাটের তিন জায়গায় তিনটি দেহ ঝুলছিল বলে জানায় পুলিশ। ৭৫ বছরের স্বপন মৈত্র ও তাঁর স্ত্রী, ৬৮ বছরের অপর্ণার দেহ মেলে ফ্ল্যাটের দু’টি ঘর থেকে। তাঁদের ছেলে সুমনরাজের (৩৯) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় খাওয়ার ঘর থেকে। তিন জনেই আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিক তদন্তের পরে জানায় পুলিশ। তবে বাবা-মাকে মেরে ঝুলিয়ে দিয়ে সুমন আত্মঘাতী হয়েছেন কি না, সেই প্রশ্নও ওঠে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বারুইপুর পুলিশ জেলার ডিএসপি (ডিইবি) মোহিত মোল্লা বলেন, “ময়না তদন্তের রিপোর্ট এখনও হাতে আসেনি। তবে চিকিৎসক মৌখিক ভাবে জানিয়েছেন, তিন জনেই আত্মহত্যা করেছেন।” পুলিশ সূত্রের খবর, ডিসেম্বরের ৩০ বা ৩১ তারিখে মৃত্যু হয় ওই তিন জনের। তাঁদের মৃত্যুর সময়েও খুব বেশি ফারাক নেই।

মৃত্যুর আগে ফেসবুক লাইভ করে সুমন দাবি করেন, তাঁকে ভয় দেখানো হচ্ছে, একঘরে করে রাখা হয়েছে। তবে প্রাথমিক তদন্তে সে রকম কিছু মেলেনি বলেই দাবি পুলিশের। ডিএসপি বলেন, “তদন্তে এমন কিছু আমরা পাইনি। তেমন কিছু ঘটেছিল কি না, তা ছেলেটির মামাকেও জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। উনিও কিছু বলতে পারেননি।” এ দিন আবাসনের একাধিক বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলেও বিষয়টি নিয়ে কোনও সূত্র পাননি তদন্তকারীরা। পড়শিরা জানান, সুমন তেমন বাইরে বেরোতেন না। কারও সঙ্গে বিশেষ কথাও হত না তাঁর। তাই ভয় দেখানো বা হুমকি দেওয়ার প্রশ্নই নেই।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে মৃত্যুর কারণ হিসাবে মানসিক অবসাদের বিষয়টিই সামনে আসছে। মনোরোগ চিকিৎসক সুজিত সরখেল বলেন, “তীব্র মানসিক অবসাদ থেকে এমন আতঙ্ক তৈরি হতে পারে। হয়তো কিছুই হয়নি। কিন্তু মনে হচ্ছে, কেউ ভয় দেখাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে সাইকোসিস নামে এক ধরনের মানসিক সমস্যা থেকেও এ রকম হয়।” পুলিশ জানিয়েছে,
পরিবারটি আর্থিক সঙ্কটে ভুগছিল। সুমনের কোনও উপার্জন ছিল না। ফ্ল্যাটটিও তাঁদের নিজস্ব ছিল না। সুমনের মামা সেটির ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। তিনি সুমনকে একাধিক কাজে ঢোকানোর চেষ্টাও করেছিলেন, কিন্তু কোথাও বেশি দিন টিকতে পারেননি তিনি। তা থেকেই সুমনকে মানসিক অবসাদ গ্রাস করে বলে অনুমান তদন্তকারীদের। সুমনের মা অপর্ণাও কিছু দিন আগে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন বলে জেনেছে পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement