প্রতীকী ছবি।
প্রভাব খাটিয়ে সম্পূর্ণ অনৈতিক ভাবে নিজের পরিবারের সদস্যদের কোভিড প্রতিষেধক দেওয়ানোর অভিযোগ উঠেছে খাদ্য দফতরের এক আধিকারিকের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানাজানি হতেই ওই দফতরের কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দানা বেঁধেছে।
খাদ্য দফতর সূত্রের খবর, খাদ্য ভবনের মোট তিনশো জন অফিসারকে কোভিড প্রতিষেধক দেওয়ার জন্য একটি তালিকা তৈরি হয়েছিল। প্রাপকদের সেই তালিকায় ১৩ নম্বরে আছেন ডিডিপিএস (ডিরেক্টরেট অব ডিস্ট্রিক্ট প্রোকিয়োরমেন্ট অ্যান্ড সাপ্লাই)-এর অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর আনন্দ বেরাইলি। দফতর সূত্রের খবর, ওই তালিকায় কেবল খাদ্য দফতরের আধিকারিকদেরই নাম থাকার কথা। কিন্তু অভিযোগ, আনন্দ নিজের প্রভাব খাটিয়ে তালিকার ১৪ নম্বরে নিজের স্ত্রী পুনম ও ১৫ নম্বরে মা মীরাদেবীর নাম আধিকারিক হিসেবে ঢুকিয়ে দিয়েছেন। গত শুক্রবার তাঁরা প্রতিষেধক নিয়েও নেন।
সোমবার বিষয়টি জানাজানি হতেই খাদ্য দফতরের অন্য কর্মীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘প্রথমে ঠিক ছিল, এই দফতরের ৭০০ জন কর্মীকে প্রতিষেধক দেওয়া হবে। পরে ওই তালিকা সঙ্কুচিত করে তিনশো জনকে প্রতিষেধক দেওয়ার কথা জানায় পুরসভা।’’ ক্ষুব্ধ কর্মীরা বলেন, ‘‘মূল তালিকা থেকে ৪০০ জনের নাম কমানো হল। দফতরের কর্মীরা সবাই প্রতিষেধক পাচ্ছেন না। অথচ, আনন্দবাবু পুরো নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে নিজের স্ত্রী ও মায়ের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে তাঁদের প্রতিষেধক দিয়েছেন। এটা কিছুতেই মানা যায় না।’’
এ প্রসঙ্গে আনন্দকে জিজ্ঞাসা করা হলে তাঁর দাবি, ‘‘আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ রটানো হচ্ছে।’’ কিন্তু প্রতিষেধক প্রাপকদের তালিকায় তো আপনার নামের পরেই আপনার স্ত্রী ও মায়ের নাম রয়েছে? এই প্রশ্ন শুনেই আনন্দ ফোন কেটে দেন।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে খাদ্য দফতরের সচিব পারভেজ আহমেদ সিদ্দিকীকে ফোন করা হলে প্রথমে তিনি বলেন, ‘‘যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে, তা হলে তা ঠিক হয়নি। ওঁর পরিবারের সদস্যদের নাম যাতে বাদ দেওয়া হয়, সে বিষয়ে ওই আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলব।’’ কিছু ক্ষণ পরে খাদ্যসচিব ফের ফোনে দাবি করেন, ‘‘আনন্দবাবু নিজের অফিস থেকে প্রতিষেধক নিচ্ছেন। আর ওঁর স্ত্রী এবং মা পুরসভার ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে প্রতিষেধক নিয়েছেন।’’
ওই আধিকারিক থাকেন সল্টলেকে। সে ক্ষেত্রে তো তাঁর স্ত্রীর ও মায়ের বিধাননগর পুর এলাকায় প্রতিষেধক নেওয়ার কথা? এই প্রশ্নের কোনও জবাব খাদ্যসচিব দিতে পারেননি।