নিউ টাউনকে বাঁচাতে এ বার ই-অটো চালানোর পরিকল্পনা করছে প্রশাসন। প্রতীকী ছবি।
পেট্রল ও ডিজ়েলচালিত অটোর দূষণ থেকে সবুজ শহর নিউ টাউনকে বাঁচাতে এ বার ই-অটো চালানোর পরিকল্পনা করছে প্রশাসন। এ জন্য বিদ্যুৎ বা ব্যাটারিচালিত অটো প্রস্তুতকারী সংস্থার খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। দ্রুত ওই প্রকল্প নিয়ে অটোচালক ও মালিকদের সঙ্গেও কথা বলতে চায় ‘নিউ টাউন কলকাতা গ্রিন স্মার্ট সিটি কর্পোরেশন’ তথা এনকেজিএসসিসি।
নিউ টাউন এলাকায় এই মুহূর্তে অটোর সংখ্যা প্রায় ৩০০ বলে জানাচ্ছে সমীক্ষা। তথ্যপ্রযুক্তি-সহ নানা ধরনের সংস্থার অফিস থাকায় প্রতিদিন বিপুল সংখ্যায় মানুষ নিউ টাউনে যাতায়াত করেন। সেই সঙ্গে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। ফলে আগামী দিনে অটোর সংখ্যা আরও বহু গুণ বাড়বে বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে।
এনকেজিএসসিসি-র এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, ‘‘একটি অটো সারা দিনে যত বার চলাচল করে, তাতে চড়া হারে দূষণ ছড়ায়। জ্বালানিচালিত অটোর বদলে বিদ্যুৎ বা ব্যাটারিচালিত অটোর ব্যবহারে সেই বিপুল দূষণ বন্ধ করা সম্ভব হবে। তবে অটোচালকেরা পুরনো অটোর বদলে যাতে ওই নতুন ধরনের অটো নিতে পারেন, সে কথা জানানো হয়েছে প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলিকে।’’
অতীতে বিকল্প শক্তিচালিত বাস নিউ টাউনের রাস্তায় নামানো হয়েছে। একাধিক চার্জিং সেন্টারও তৈরি হয়েছে সেখানে। এমনকি, আগামী দিনে রাজ্য সরকার পরিবহণ ব্যবস্থাকে এই বিকল্প শক্তিনির্ভর করে তুলতে চাইছে। এমতাবস্থায় নিউ টাউন এলাকায় অটোর মতো একটি পরিবহণ মাধ্যমকে বিকল্প শক্তি দ্বারাই পরিচালিত করতে চাইছে এনকেজিএসসিসি।
যদিও এই প্রস্তাবে অটোচালকদের রাজি করানোটাই নিউ টাউন প্রশাসনের কাছে আসল পরীক্ষা হতে যাচ্ছে। কারণ, এর আগে বেপরোয়া গাড়ি চালানো থেকে শুরু করে যাত্রীদের সঙ্গে ব্যবহার— সব ক্ষেত্রেই অটোচালকদের একটা বড় অংশ প্রশাসনের নির্দেশকে উপেক্ষাই করে এসেছেন। যদিও সংস্থার ওই শীর্ষ আধিকারিকের দাবি, ‘‘এ ক্ষেত্রে অটোচালকদের দ্বিমত থাকার কথা নয়। কারণ তাঁদের জ্বালানির পিছনে যা খরচ হয়, ই-অটোয় তার চেয়ে খরচ কমবে। আর সবুজ তকমাপ্রাপ্ত শহরে দূষণ নিয়ন্ত্রণ খুব প্রয়োজন। অটোচালক বা অটোর মালিকেরা এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে যাবেন বলে তো মনে হয় না।’’
আধিকারিকেরা জানান, নতুন ধাঁচের এই অটো চালু করার জন্য চালকদের নতুন করে অটো কিনতে হবে না। বর্তমানে একটি অটোর সব রকম বৈশিষ্ট্যই এই নতুন ব্যবস্থায় অক্ষুণ্ণ থাকবে। পুরনো অটোর বদলে চালকেরা তাঁদের পছন্দের সংস্থার থেকে এই নতুন অটো নিতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে প্রশাসন অটোচালক বা ই-অটো প্রস্তুতকারী সংস্থার মধ্যে মাথা গলাবে না বলেই আধিকারিকদের দাবি।
তবে মাদার ওয়াক্স জাদুঘর থেকে চিনার পার্কের মধ্যে চলাচলকারী একটি অটো রুটের সভাপতি মহম্মদ আফতাবউদ্দিনের কথায়, ‘‘দূষণের শিকার তো যে কেউ হতে পারেন। আমাদের এখনও কিছু বলা হয়নি। প্রশাসন চাইলে অটোচালকেরা অবশ্যই পাশে দাঁড়াবেন। তবে নতুন ব্যবস্থায় অটোচালকদের সমস্যা যাতে না হয়, প্রশাসনকে সেটা নিশ্চিত করতে হবে।’’