ঠাকুরমা ও নাতির মাথা থেঁতলানো মৃতদেহ উদ্ধার করল পুলিশ। প্রতীকী ছবি।
ঠাকুরমা ও নাতির মাথা থেঁতলানো মৃতদেহ উদ্ধার করল পুলিশ। শুক্রবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে মহেশতলা থানার জিঞ্জিরাবাজারে, সরকারপোল এলাকায়। মৃত প্রৌঢ়ার নাম মায়া মণ্ডল (৫৬)। নাতির নাম সোনু (৭)।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বিকেলে সোনুর গৃহশিক্ষক উৎপল মণ্ডল ওই বাড়িতে যান। সদর দরজাটি ভেজানো ছিল। তিনি দরজা ঠেলে ঘরে ঢুকে দেখেন, মাটিতে ঠাকুরমা ও নাতি মুখ থুবড়ে পড়ে রয়েছেন। চার দিকে রক্ত। ওই দৃশ্য দেখে আতঙ্কে চিৎকার করে ওঠেন উৎপল। যা শুনে আশপাশের বাসিন্দারা ছুটে আসেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মৃতদেহ দু’টি উদ্ধার করে বেহালার বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিজেদের দোতলা বাড়ির একতলায় থাকতেন ঠাকুরমা ও নাতি। গৃহকর্তা তারক মণ্ডল দোতলার ঘরে থাকেন। তিনি শয্যাশায়ী। নিজে বিছানা থেকে উঠতে পারেন না। মায়ার ছেলে শেখর বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একটি ধূপকাঠি তৈরির কারখানায় কাজ করেন। বছর চারেক আগে শেখরের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। তাঁর ছেলে সোনু ঠাকুরমার কাছেই থাকত।
তদন্তকারীরা জানান, মাথায় ভারী কোনও বস্তু দিয়ে একাধিক বার আঘাত করে ওই দু’জনকে মারা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান। সে ক্ষেত্রে আততায়ীর সংখ্যা একাধিক বলে মনে করা হচ্ছে।ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শেখর ও উৎপলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত খুনের কোনও সূত্র পাওয়া যায়নি।’’তবে, ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণেই খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
তদন্তকারীরা জানান, ঘরের আলমারি ও অন্যান্য আসবাবপত্রে হাত দেওয়া হয়নি। আলমারি তালাবন্ধ ছিল। সেটির চাবিও যেখানে থাকার, সেখানেই পাওয়া গিয়েছে। তা থেকেই তদন্তকারীদের অনুমান, পরিকল্পিত ভাবে খুন করা হয়েছে। ঘর থেকে খুনের কোনও অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। এখনও পর্যন্ত মেলেনি কোনও সূত্র।
আশপাশের এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে সূত্রের খোঁজ করছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের অনুমান, বিকেল তিনটে থেকে চারটের মধ্যে ওই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। পুলিশ জানিয়েছে, সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শেখরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কোনও ব্যক্তিগত শত্রুতার বিষয় রয়েছে কি না, তা-ও দেখা হচ্ছে।