প্রতীকী ছবি।
করোনার কোনও উপসর্গ না-থাকায় কোভিড-পজ়িটিভ এক দমকলকর্তাকে হোম কোয়রান্টিনে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু ওই কর্তা দমকলের সদর দফতরেরই উপরের তলার আবাসনে থাকায় আপত্তি তুলেছেন তাঁর দফতরের কর্মীরাই। ওই দমকলকর্তার অবশ্য দাবি, ‘‘আমি যথেষ্ট সাবধানে আছি। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধও খাচ্ছি।’’
সপ্তাহ তিনেক আগে দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর এক পরিচারিকার করোনা ধরা পড়ে। তার পরে মন্ত্রী ও তাঁর স্ত্রীরও নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। সেই রিপোর্ট আসার আগের দিন, ২৭ মে মৃত এক দমকলকর্মীর পরিবারকে সমবেদনা জানাতে বালি দমকলকেন্দ্রে গিয়েছিলেন মন্ত্রী। তাঁর করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর জানাজানি হতেই দমকলের ডিজি-সহ চার কর্তা হোম কোয়রান্টিনে চলে যান। কারণ, তাঁরা প্রত্যেকেই বালিতে মন্ত্রীর সংস্পর্শে এসেছিলেন।
দমকল সূত্রের খবর, চার জনের মধ্যে ডেপুটি ডিরেক্টর পদমর্যাদার এক কর্তার করোনা রিপোর্ট
পজ়িটিভ আসে গত ৮ জুন। তিনি ফ্রি স্কুল স্ট্রিটে দমকলের সদর দফতরের তিনতলার আবাসনে একা থাকেন। সূত্রের খবর, রিপোর্ট পজ়িটিভ
আসার পরেই দমকলের ওই কর্তা ই এম বাইপাসের একটি হাসপাতালে ভর্তি হতে যান। কিন্তু তাঁর করোনার কোনও উপসর্গ না থাকায় চিকিৎসকেরা হোম কোয়রান্টিনে থাকার পরামর্শ দেন। পাশাপাশি, ওষুধও খেতে বলেন।
তিনতলায় যে ঘরে ওই কর্তা রয়েছেন, তার উল্টো দিকেই
রয়েছে দমকলের একটি অফিস। দমকল সূত্রের খবর, এক জন করোনা-আক্রান্তের ঘর সংলগ্ন অফিসে কাজ করতে শীর্ষ কর্তাদের কাছে তীব্র আপত্তি জানান কর্মীদের একাংশ। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সেই আপত্তিকে আমল না দেওয়ায় প্রবল ক্ষুব্ধ ও হতাশ তাঁরা। দমকলের এক আধিকারিকের মতে, এ ভাবে এক জন করোনা রোগীকে অফিসের চৌহদ্দিতে রাখাটা খুবই অনুচিত। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে ওই আবাসন পুরোপুরি ‘সিল’ করে দিয়ে জীবাণুমুক্ত করা হোক।
আর এক জন কর্মীর কথায়, ‘‘ওঁকে খাবার, জল দমকলের কর্মীরাই পৌঁছে দিচ্ছেন। যে বা যাঁরা ওঁর কাছে যাচ্ছেন, তাঁরাও আতঙ্কে রয়েছেন।’’
এ বিষয়ে দমকলের ডিজি জগমোহন শনিবার বলেন, ‘‘তিন-চার জন আধিকারিক অপপ্রচারের মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর খবর ছড়াতে চাইছেন। ওই আধিকারিক নিজের কোয়ার্টার্সের মধ্যে যথেষ্ট সাবধানে চিকিৎসকেদের পরামর্শ মেনেই রয়েছেন।’’ ডিজি জানান, আক্রান্তের বাড়ি অনেক দূরে, হাওড়ার প্রত্যন্ত এলাকায়। এই পরিস্থিতিতে তাঁকে বাড়ি পাঠানো সম্ভব নয়। তাই মানবিক কারণেই তাঁকে কোয়ার্টার্সে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ওই বাড়িটি নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে।