—ফাইল চিত্র।
গড়িয়াহাট থানা এলাকায় এক মহিলার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ কলকাতা হাই কোর্ট। ওই মামলার তদন্ত যাতে ঠিক ভাবে হয়, তার জন্য বুধবার সেটির তদন্তভার লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের হাতে তুলে দিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। এ দিনের শুনানিতে বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘ওই অস্বাভাবিক মৃত্যুতে গড়িয়াহাট থানায় গত ৬ মে অভিযোগ দায়ের করা হয়। অথচ তার এক মাস পরে হাতের লেখা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে! এটা কি নিশ্চিত যে, কেস ডায়েরিতে সুইসাইড নোট নেই?’’
পুলিশ সূত্রের খবর, গত ২ মে বালিগঞ্জ প্লেসের আবাসন থেকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয় বছর ৫৯-এর সঞ্চয়িতা ভট্টাচার্যকে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করে পুলিশ। সঞ্চয়িতার দেহের ময়না তদন্ত হলেও ভিসেরা পরীক্ষার রিপোর্ট মেলেনি বলে অভিযোগ। ঘটনার চার দিন পরে মৃতার বোন নিবেদিতা ভট্টাচার্য দিদির শ্বশুরবাড়ির একাধিক সদস্যের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের তদন্ত করছিল গড়িয়াহাট থানা। এমনকি, অভিযোগকারিণীর গোপন জবানবন্দিও নেওয়া হয় বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
আদালত সূত্রের খবর, তার পরেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না, এই মর্মে হাই কোর্টে মামলা করেন নিবেদিতা। তিনি জানান, ২০০৮ সালে সঞ্চয়িতার বিয়ে হয়। ২০২১ সালে স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে একাই থাকতেন তিনি। অভিযোগ, বিভিন্ন আর্থিক বিষয়ে শ্বশুরবাড়ির সদস্যেরা সঞ্চয়িতার সঙ্গে প্রতারণা করেন। এমনকি, তাঁকে হুমকিও দেওয়া হত বলে অভিযোগ। কিন্তু পুলিশ অভিযুক্তদের কোনও জিজ্ঞাসাবাদ বা গ্রেফতার করেনি বলে অভিযোগ করেছেন নিবেদিতা।
মামলাকারীর আইনজীবী ময়ূখ মুখোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, ওই বাড়ি থেকে সুইসাইড নোট পাওয়া গিয়েছে। পুলিশ সেটি বাজেয়াপ্তও করেছে। কিন্তু তদন্তকারী অফিসার কেস ডায়েরিতে কোনও সুইসাইড নোট দেখাননি, যা সম্পূর্ণ পুলিশের গাফিলতি।
তবে এ দিন সরকার পক্ষের কৌঁসুলি দাবি করেন, এফআইআর করা হয়েছে ও তদন্ত চলছে। সুইসাইড নোটটি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। হস্তলেখা বিশারদের রিপোর্ট এলেই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হবে।