ব্যবস্থাপনা: বিমানবন্দরের পুরনো অন্তর্দেশীয় টার্মিনালে এ ভাবেই তৈরি হয়েছিল কোয়রান্টিন কেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র
কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে সেখানকার পুরনো অন্তর্দেশীয় টার্মিনালকে কোয়রান্টিন কেন্দ্র করার ব্যবস্থা করেছিল রাজ্য সরকার। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, মূলত বিদেশ থেকে কলকাতায় আসা বিমানযাত্রীদের কথা ভেবেই তৈরি হয়েছিল ওই কেন্দ্র। ঠিক ন’দিনের মাথায়, মঙ্গলবার তুলে নেওয়া হল সেটি। মাঝখান থেকে কেন্দ্র তৈরির জন্য খরচ হয়ে গেল কয়েক লক্ষ টাকা!
রাজ্য নিজে নয়, তাদের তরফে একটি বেসরকারি সংস্থাকে এই কাজ করার বরাত দেওয়া হয়েছিল। সেই টাকা তাদের মেটাতে হবে রাজ্যের কোষাগার থেকেই। গত ৯ দিনে এক জন যাত্রীকেও নতুন ওই কোয়রান্টিন কেন্দ্রে রাখা হয়নি।
কেন বন্ধ করে দেওয়া হল এই কোয়রান্টিন কেন্দ্রটি? সূত্রের খবর, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার তাদের নিয়মাবলীতে পরিবর্তন এনেছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের প্রথম সাত দিন নিজেদের খরচে কোনও হোটেলে থাকতে হচ্ছে। তার পরে দেহে সংক্রমণের আভাস না-মিললে আরও সাত দিন তাঁদের বলা হচ্ছে গৃহ-পর্যবেক্ষণে থাকতে।
এমনকি, বিমানবন্দরে নামার পরে পরিস্থিতি বুঝে অনেককে সরাসরি গৃহ-পর্যবেক্ষণেও পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে রাজ্যের ওই কোয়রান্টিন কেন্দ্রের আর প্রয়োজন হচ্ছে না।
মে মাসের শেষে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে ওই জায়গাটি চেয়েছিল রাজ্য সরকার। এটি বর্তমান টার্মিনাল লাগোয়া পুরনো অন্তর্দেশীয় টার্মিনাল। সেটি আপাতত হজ যাত্রীদের জন্য বরাদ্দ করা রয়েছে। এ বছরে হজ যাত্রাও বন্ধ। এমনিই পড়ে ছিল বলে টার্মিনালটি রাজ্যকে ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছিলেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। এর জন্য ভাড়া চাওয়া হয়নি। শুধু কর্তৃপক্ষের তরফে বলা হয়েছিল, বিশাল ওই হলঘরে কোয়রান্টিন কেন্দ্র চালাতে গেলে এসি-র জন্য যে বিদ্যুৎ খরচ হবে, সেই টাকা রাজ্যকে দিতে হবে। সেই কারণে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে আলাদা মিটারও বসানো হয়।
যে বেসরকারি সংস্থাকে কাজের বরাত দিয়েছিল রাজ্য, তারাই একসঙ্গে চারশো লোক থাকবেন ধরে নিয়ে ওই কোয়রান্টিন কেন্দ্রে ৪০০টি নতুন শয্যা ও বালিশের ব্যবস্থা করে। বিমানবন্দরের শৌচাগারে যে হেতু স্নানের ব্যবস্থা থাকে না, তাই কোয়রান্টিন কেন্দ্রের শৌচাগারে স্নানের ব্যবস্থা রাখা হয়। ২৪ ঘণ্টা সেখানে যাতে চিকিৎসক থাকতে পারেন, সে জন্য টার্মিনালের একটি পরিত্যক্ত দোকানঘরকে চিকিৎসকদের ঘরে পরিবর্তন করা হয়।
এ ছাড়াও ওই কোয়রান্টিন কেন্দ্রে যে কর্মীরা থাকতেন, তাঁদের খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। ঠিক হয়েছিল, কেষ্টপুরের কাছে কোনও একটি জায়গা থেকে নিয়মিত বিমানবন্দরে সেই খাবার পৌঁছে দেওয়া হবে। তার জন্য কেনা হয়ে গিয়েছিল লক্ষাধিক টাকার ফুড প্যাকেট। আশঙ্কা, তার টাকাও যোগ হবে অপচয়ের খাতায়।