বাবার সঙ্গে আহসানা খাতুন। নিজস্ব চিত্র
কোভিড-পরিস্থিতিতে হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনের ১২ দিন পরে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরল ১৭ বছরের আহসানা খাতুন। হলদিয়ার কাছে কুমারপুর গ্রামের বাড়িতে ফিরে ফের স্কুলে যাওয়ার অপেক্ষায় মেয়েটি। তবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে এখনও কিছু দিন তাকে পর্যবেক্ষণে থাকতে হবে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
বাইপাসের হাসপাতাল থেকে পথ দুর্ঘটনায় মৃত ৩১ বছরের সংগ্রাম ভট্টাচার্যের হৃৎপিণ্ড সংগ্রহ করে হাওড়ার বেসরকারি হাসপাতালে আনানো হয়। সেখানেই আহসানার শরীরে ১৭ অগস্ট তা প্রতিস্থাপিত হয়। শল্য চিকিৎসক দেবাশিস দাস, নীলাঞ্জন দত্ত, অ্যানাস্থেটিস্ট রঙ্গন কোলে, মণীশ শর্মা ওই অস্ত্রোপচার করেন। প্রাপ্তবয়স্ক কারও হৃৎপিণ্ড ৩১ কেজি ওজনের ছোটখাটো কিশোরীর দেহে স্থাপনের কাজটি সন্তর্পণে সারতে হয়েছে বলে জানান ডাক্তারেরা। অস্ত্রোপচার পরবর্তী আহসানার দেখভাল করছিলেন ক্রিটিক্যাল কেয়ার চিকিৎসক শুভদীপ দাস, শিশু হৃদ্রোগ চিকিৎসক অমিতাভ চট্টোপাধ্যায়, জয়িতা নন্দী এবং সঞ্জীবন দাসেরা। ‘‘এই পরিস্থিতিতে রোগিণীর শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা কিছুটা কমিয়ে রাখতে হয়। সেই সঙ্গে নতুন কোনও সংক্রমণ ঠেকিয়ে রাখাও চ্যালেঞ্জ।”― বলছিলেন চিকিৎসকেরা।
বছরখানেক ধরে বাবার সঙ্গে হাওড়ার হাসপাতালে যাতায়াত করছিল কুমারপুর মসজিদের ইমাম শেখ হেদায়েতুল্লার তিন মেয়ের বড় আহসানা। হৃৎপিণ্ডের কর্মক্ষমতা কমে আসায় দুর্বল হয়ে পড়ছিল সে। তাই হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন ডাক্তারেরা। এ রাজ্যে অঙ্গ প্রতিস্থাপন সংক্রান্ত সমন্বয়কারী সংস্থা রোটোর মাধ্যমে কাজটি সম্পন্ন হয়েছে।
দশম শ্রেণিতে ওঠার পরেই অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালেও বার বার দুঃখ করেছে আহসানা। তার বাবা বলেন, “চিকিৎসায় হাসপাতাল সাহায্য করেছে ঠিকই। তবে বছর দুয়েক ধরে কয়েক লক্ষ টাকা ধার করে মেয়ের চিকিৎসা করাচ্ছি। বিজ্ঞান ওর প্রিয়। মেয়েটা নতুন জীবন ফিরে পাবে ভেবেই শান্তি পাচ্ছি।”